
সিরাজগঞ্জে ইভটিজিংয়ে বাধা দেওয়ায় স্কুলচত্বরেই আব্দুস সামাদ (৫৫) নামের এক শিক্ষককে রড দিয়ে পিটিয়েছে সাবেক ও বর্তমান কয়েক ছাত্র।
বুধবার (৮ জুন) দুপুরে উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের পোড়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
আহত আব্দুস সামাদ ওই বিদ্যালয়ের বাংলার শিক্ষক। তাকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষককে মারপিটের ঘটনার প্রতিবাদে বিদ্যালয়ের হাজারও ছাত্র-ছাত্রী বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
পোড়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে সাবেক ছাত্র জারিলা মসুর গ্রামের সাজিদুল, বর্তমান ছাত্র একই গ্রামের নয়ন ও সবুজ এসে দোতলায় মেয়েদের কক্ষে যেতে চায়। এ সময় শিক্ষক আব্দুস সামাদ তাদের বলেন, উপরে মেয়েদের পরীক্ষা চলছে সেখানে যাওয়া নিষেধ। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তারা দোতলায় উঠে গেলে ছাত্রীরা ভীত হয়।
পরে শিক্ষক আব্দুস সামাদ ওই তিন ছাত্রকে বের করে অফিস কক্ষে নিয়ে যায়। অফিস কক্ষে গিয়ে তারা শিক্ষকদের উপর চড়াও হয়। পরে তাদের শাসন করে বের করে দেওয়া হয়।
এ ঘটনার জেরে দুপুরে বিদ্যালয়ের পাশের মসজিদে যোহরের নামাজ পড়ে বেরিয়ে আসার সময় শিক্ষক আব্দুস সামাদকে পেছন থেকে রড ও পাইপ দিয়ে পেটায় ওই তিন ছাত্রসহ তাদের সহযোগীরা। স্থানীয়রা এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়। পরে শিক্ষককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে ঘটনার পর পরই বিদ্যালয়ে এক হাজারেরও বেশি ছাত্র-ছাত্রী বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে থেকে মিছিল বের করে কড্ডার মোড় পর্যন্ত পুরো রাস্তা অবরোধ করে রাখে।
আহত শিক্ষক আব্দুস সামাদ বলেন, সাজিদুল গত বছর এই স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেছে। সে চাচাতো বোনের সঙ্গে দেখা করবে বলে দোতলায় যেতে চায়। আমি তাকে বলি দোতলায় ছেলেদের যাওয়া নিষেধ। চাচাতো বোনের নাম বললে আমরা ডেকে এনে তোমার সঙ্গে দেখা করাব। কিন্তু সে নিষেধ অমান্য করে দোতলায় উঠে ছাত্রীদের ইভটিজিং করে। এতে ছাত্রীরা ভীত হয়ে গেলে তাকে জোর করে নামিয়ে এনেছি। এটাই আমার অপরাধ।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পুলিশ যাওয়ার আগেই বিষয়টি মিমাংসা হয়েছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জানিয়েছেন।
তবে আহত শিক্ষক আব্দুস সামাদ মিমাংসার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই মেনে নেব।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ইভটিজিংয়ে বাধা দেওয়া শিক্ষককে পেটানো হয়েছে বলে শুনেছি।