
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ডিবিসি নিউজের জ্যেষ্ঠ প্রযোজনা নির্বাহী আব্দুল বারী (২৮) খুনের ঘটনায় তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জে চলছে শোকের মাতম। বারীর জন্য নতুন ঘর তোলা হয়েছে, ঈদে বাড়িতে আসলেই হওয়ার কথা ছিল বিয়ে। পছন্দ করে রাখা হয়েছে মেয়েও। সেই বারী খুন হওয়ায় এলাকাবাসীর মুখে মুখে প্রশ্ন, শান্ত স্বভাবের ভদ্র ছেলেটাকে মারল কারা? কেনই বা মারা হলো এমন নির্মমভাবে।
জানা যায়, বারী সিরাজগঞ্জ সদরের শিয়ালকোল ইউনিয়নের চণ্ডিদাসগাতি গ্রামের আব্দুল্লাহ শেখের ছেলে। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে বারী ছিলেন সবার ছোট।
ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে আব্দুল বারী প্রথমে যোগ দেন মোহনা টেলিভিশনে। এরপর গত বছরের ডিসেম্বরে জ্যেষ্ঠ প্রযোজনা নির্বাহী হিসেবে চাকরি নেন ডিবিসি নিউজে। থাকতেন ঢাকার একটি ব্যাচেলর মেসে। তাকে হত্যার সংবাদ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছার পর নিহতের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সবার মুখে ঘুরে ফিরে একই প্রশ্ন, শান্ত প্রকৃতির ছেলেটি কেন খুন হলো?
নিহতের বড় ভাই আব্দুল আলিম বলেন, নিজ এলাকায় বারীর কোনো শত্রু ছিল না। ঢাকায় থাকাকালে কারও সঙ্গে শত্রুতা তৈরি হয়েছিল কি না তা আমাদের জানা নেই। দ্রুত হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
নিহতের মা আলেয়া খাতুন বলেন, ছেলের জন্য নতুন ঘর তুলেছি, ঈদের ছুটিতে বাড়ি এলে বিয়ে করাতে চেয়েছিলাম। কনেও পছন্দ করে রেখেছি। আমার সেই ছেলেকে কারা হত্যা করল? আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছেলে হত্যার বিচার চাই।
নিহতের বাবা আব্দুল্লাহ শেখ বলেন, কী কারণে আমার সান্ত ছেলেটাকে হত্যা করা হয়েছে আমার জানা নেই। বারির অফিস থেকে জেনেছি, এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে সিআইডি।
ডিবিসি নিউজের সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি রিফাত রহমান জানান, নিহত সহকর্মী বারীর ময়নাতদন্তের কাজ শেষ হয়েছে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে ডিবিসি কার্যালয়ে প্রথম জানাজা নামাজ শেষে মরদেহ সিরাজগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে আনা হবে।
পরিবারের বরাদ দিয়ে রিফাত রহমান আরও জানান, নিহত বারীর মরদেহ আসলে গ্রামের চন্ডিদাসগাতী কবরস্থানে শেষ কাজ সম্পন্ন করা হবে।
আফজাল আলী, আব্দুল মালেকসহ এলাকার অনেকেই বলেন, বারী খুবই শান্ত স্বভাবের ছেলে। আমাদের জানা মতে, এলাকায় তার কোনো শত্রু নেই। কিন্তু এমন ছেলেকে কেন খুন করা হলো, আর কারাই বা করল এটাই আমাদের প্রশ্ন। আমরা এলাকাবাসী এর সঠিক বিচার চাই।