এম শাহজাহান মিয়া শেরপুর প্রতিনিধিঃ
শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলায় ৯ জুন মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পাহাড়ী ঢলের পানি সদর, কাংশা ও ধানশাইল ইউনিয়নে কমতে শুরু করেছে। এদিকে হাতিবান্দা ও মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের অনেক এলাকায় পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির নানা চিত্র উঠে এসেছে। শুক্রবার বন্যার পানিতে পড়ে মারা গেছে সদর ইউনিয়নের সারি কালিনগর গ্রামের রফিকুল ইসলামের (১৪মাস) বয়সের মেয়ে দিয়ামনির। উপজেলার মহারশি ও সোমেশ্বরী নদী পাড়ের এলাকা গুলোতে অনেক জায়গায় বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। এতে উপজেলা পরিষদ সহ বাজারে পানি প্রবেশ করে। এই ঘটনা প্রায় প্রতি বছরই ঘটছে। দ্রুত সংস্কার করা না হলে আবারও যে কোন সময় পানি প্রবেশ করতে পারে। খরস্রোতা এই পাহাড়ী নদীতে ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টি হলেই ৫/৬ ফুট উঁচু হয়ে পানি নেমে আসে। ফলে মানুষ আত্মরক্ষার জন্য তেমন সময়‌ ও প্রস্তুতি নিতে পারে না। উপজেলার সকল গুরুত্বপূর্ণ অফিস, ঝিনাইগাতী বাজার ও সংলগ্ন অন্তত ১০ টি গ্রামের মানুষ প্রায় একযুগ ধরে দাবী করে আসছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে মহারশি নদীর উভয় পাড়ে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য। এনিয়ে অতীতে বিক্ষুব্ধ হয়ে মানুষজন বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানব বন্ধন সহ বিক্ষোভ মিছিল‌ও করেছেন। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং সরকারের নানা মহল থেকে অনেকবার আশ্বাস মিললেও আজো তা বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে প্রতি বছর ঘরবাড়ি ভাঙছে, শত শত পুকুরের মাছ ভেসে যাচ্ছে, হাজার হাজার একর জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হলেও নিরবে মানুষজনকে তা সয়ে নিতে হচ্ছে।
সদর উপজেলার বনকালী, দীঘিরপাড়, খৈলকুড়া, রামেরকুড়া এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে মানুষের সাথে কথা বললে তারা জানান, উপজেলা প্রশাসন থেকে বার বার বাঁধের এসব ভাঙন মেরামত করতে যে সামান্য বরাদ্দ দেয়া হয় তাও দায়ীত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধিগন ঠিকভাবে কাজে লাগাননা। তারা সকলেই দাবি করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের।
এদিকে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জন্য ইতোমধ্যে ১০ মেট্রিক টন চাউল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। শনিবার উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আল মাসুদ এর তত্ত্বাবধানে ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে এসব চাল বিতরণ শুরু করা হয়েছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ূন সাহেব জানান, কিছু কিছু এলাকায় পানি কমলেও আবার কিছু এলাকায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। সার্বিক ক্ষয়ক্ষতি এখনও নিরুপন করা যায়নি। তবে শত হেক্টরের উপরে সবজি ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। আউশ ধানের আবাদ প্রায় ২০ হেক্টর আংশিক এবং বাকিটা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে তিনি জানান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *