এমদাদুল হক মাসুম, ডোমার প্রতিনিধি:
নীলফামারীর ডোমারে নেসকো’র রংপুর বিভাগের দ্বায়িত্বরত জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ওয়াছ কুরুনী খাঁন চৌধুরী কর্তৃক আজগুবি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে বেপরোয়া ঘুষ বানিজ্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে ভূক্তভোগীরা।
১৭জুন শুক্রবার সকাল ১১টায় ডোমার কেদ্রীয় শহীদ মিনার চত্তরে ভুক্তভোগী বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতির ব্যানারে আয়াজিত মানববন্ধন ও বিক্ষাভ সমাবেশে গোলাম কুদ্দুস আইয়ুবের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।
ডোমার উপজেলায় নেসকোর কর্মকর্তা কর্মচারীদের স্বেচ্ছাচারীতা, দূর্নীতি ও নানাবিধ অপকর্মে গ্রাহকরা এমনিতই দিশেহারা। তার উপর অত্যাচারের নতুনত্ব নিয়ে যোগ দিয়েছেন, রংপুর বিভাগে নিযুক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ওয়াছ কুরুনী। বিচারক হিসাবে যেখানে বিদ্যুৎ বিভাগের অনিয়ম ও দূর্নীতি নিয়ন্ত্রনে তার কাজ করার কথা। সেখানে ম্যাজিষ্ট্রেট ওয়াছ কুরুনী বিচার কার্যের মতো মহান পেশার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে, নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে বিচারাঙ্গনকে ঘুষের বাজারে পরিনত করেছেন মর্মে বক্তারা অভিযোগ করেন। ঘুষ বানিজ্যের বিষয়ে ডোমার বড় রাউতা পেট্রোলপাম্প এলাকার আব্দুল হাই বলেন, মাত্র ৩২শ টাকা বিল বাকী থাকার অজুহাতে আমার বিরুদ্ধ ৩লক্ষ টাকার ক্ষতিপুরণ মামলা করেন উক্ত ম্যাজিষ্ট্রেট। পরবর্তিতে আদালতে গেলে আমাকে তার চেম্বারে ডেকে ১লক্ষ টাকা ঘুষ দাবী করেন। তার নির্দেশনায়ই তার নিযুক্ত দালালের মাধ্যমে ৫৫ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে মামলা দফারফা করতে বাধ্য হই। ৩ লক্ষ টাকার জরিমানা মামলায় ৫৫হাজার টাকা ঘুষ পাওয়ার পরে ম্যাজিষ্ট্রেট ৫হাজার টাকা সরকারী কোষাগারে জমার আদশ দিয়ে আমার মামলা শেষ করেন! অপর ভুক্তভোগী আজিজুল ইসলামর স্ত্রী কহিনুর বেগম বলেন, ম্যাজিষ্ট্রেট সাধারন গ্রাহকদের মামলার ফাঁদে ফেলে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ আদায় করছেন। গরীব অসহায় গ্রাহকদের কথিত জরিমানা মামলার নামে ঘুষ বানিজ্য করে সম্পদের পাহাড় গড়লেও দেখার যেন কেউ নাই। তিনি আরা বলন ২১হাজার টাকা বকেয়ার দায়ে আমার বিরুদ্ধে ৫ লক্ষ টাকার মামলা হয়। ধার্য তারিখে তার অফিসে গেলে ম্যাজিষ্ট্রেট ওয়াছ কুরুনী সরাসরি আমার কাছ ১লক্ষ টাকা ঘুষ দাবী করে মামলা দফরফা করার প্রস্তাব দেয়। তার দাবীকৃত ঘুষ না দিলে আমার স্বামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরওয়ানা জারির হুমকি দিলে আমি ভয়ে বাধ্য হয়ে ১লক্ষ টাকা ঘুষ দিয় মামলা নিস্পত্তি করলেও, আমাক ১০হাজার টাকা সরকারী কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়। ম্যাজিষ্ট্রেট ওয়াছ কুরুনি খাঁন চৌধুরীর ঘুষ বানিজ্যের বিষয়ে আরো অনেকে প্রতিবেদককে অভিযোগ করেন।
এই ঘুষ বানিজ্যের প্রতিবাদে প্রধান অতিথি রুহিন হোসেন প্রিন্স বলন, ম্যাজিষ্ট্রেট ন্যায় বিচার না করে তিনি এবং তার দালাল দিয়ে যা করছেন, তা দেশের বিচার ব্যাবস্থাকে কুলষিত করেছে। তার মামলার ফাঁদে পড়ে অসহায় ভূক্তভোগীরা গরু, ছাগল, ভ্যান এমনকি ১২দিনের দুধের বাছুর রেখে গাভীটি পর্যন্ত বিক্রিকরে ম্যাজিষ্ট্রেটকে ঘুষ দিতে হয়েছে। তার এমন রাষ্ট্র বিরোধী কর্মকান্ডের জন্য ভুক্তভোগীরা তাকে নেসকোর কসাই হিসাবে আখ্যায়িত করেন।
ঘুষ বিষয়ে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান হিল্লোল বলেন ডোমার নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী একটা চরম অযোগ্য ও অথর্ব লোক। তার অফিসওত ঘুষের বাজার, নির্বাহী প্রকৌশলী ডোমারকে তাদের লুটপাটের কারখানা বানিয়ে ম্যাজিষ্ট্রেটকে তার সহযোগী করেছেন। তিনি আরো বলেন মামলার নামে বছরের পর বছর এরকম ঘুষের উৎসব চললেও তিনি, কি ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন ডোমারবাসি তা জানতে চায়। লুটপাট ও রমরমা ঘুষ বাজার বিষয়ে বিদ্যুৎ আন্দোলনের নেতা গোলাম কুদ্দুস আইয়ুব বলেন, ম্যাজিষ্ট্রট ওয়াছ কুরুনী বিচারালয়কে প্রকাশ্যে ঘুষের হাট বানিয়েছেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন একটি স্বাধীন দেশে একজন বিচারক এ কি করছে, দেখার কি কেও নেই?
জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ওয়াছ কুরুনী’র বিরুদ্ধে ঘুষ বানিজ্যের বিষয়ে তার বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তা রিসিভ হয়নি।
#

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!