received 312331608203453



বাঘা( রাজশাহী) প্রতিনিধি :
১৯৯৬ সালে স্থাপিত হওয়া বিদ্যালয়টির নাম ফতেপুর বাউসা উচ্চ বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়টি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার ৫ নং বাউসা ইউনিয়নে অবস্থিত। স্থানীয়দের অনুদানে ৩১ শতক জায়গা নিয়ে বিদ্যালয়টি যাত্রা শুরু করে। তবে প্রতিষ্ঠার ২৭ বছর পরেও বিদ্যালয়ের অবকাঠামোর উন্নতি হয়নি। নির্মাণ করা হয়নি কোন পাকা ভবন। নেই টয়লেটের ভালো ব্যবস্থা। অনেক দিন আগে নির্মিত টিনশেডের ঘরটির বর্তমান অবস্থা করুণ। টিনের ঘরের ১২ টি কক্ষের মধ্যে ২টি অফিস কক্ষ, ১টি বিজ্ঞানাগার, ১টি কমন রুম এবং অন্য ৮টি কক্ষে চলে ক্লাস। প্রয়োজন অনুযায়ী আসবাবপত্র নেই স্কুলে। বর্ষা মৌসুমে টিনের চালা দিয়ে পানি পড়ে বই-খাতা ভিজে যায়। দিনে প্রচন্ড তাপদাহে অতিষ্ঠ হয় স্কুল শিক্ষার্থীরা। আর এমনই প্রতিকুলতার মধ্য দিয়ে ২০০ জন ছাত্র- ছাত্রীকে প্রতিদিন ক্লাস করতে হচ্ছে এখানে। পাঠদানের অনুপযোগী শ্রেণীকক্ষ ও ঝুঁকিপূর্ণ ঘরের কারণে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যাওয়ার আগ্রহ হারাচ্ছে।

এ কারণে শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে অনেকটা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন অভিভাবক মহল। এত সমস্যার মধ্যেও স্কুলটির ছাত্র/ছাত্রীরা পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করে সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হচ্ছে। প্রায় প্রতিবছরই ২/১টি গোল্ডেন এবং ৪/৫ টি এপ্লাস পেয়ে থাকে‌। এছাড়াও খেলা ধুলার বিষয়েও পিছিয়ে নেয় এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রায় প্রতি বছরই এই স্কুল থেকে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে থাকে। গত ২০২২ সালে ২০০ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতায় যশোর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ৩য় স্থান অধিকার করেছে রাহূল নামের ৯ম শ্রেনীর এক ছাত্র। তার ইচ্ছা সে ওয়ার্ল্ড কাপে নাম লিখাবে । কিন্তুু ৯ম শ্রেণী পড়ুয়া এই ছাত্র আফসোস করে বলে, বর্ষা মৌসুমে স্কুল মাঠে এক হাঁটু পানি জমে। তাই ঠিক মতো খেলাধুলা করতে পারিনা।

সহকারী শিক্ষক কামরুজ্জামান বলেন, বর্ষা মৌসুমে আমরা ঠিকমত ক্লাস নিতে পারিনা। টিনের চাল বেয়ে পানি পড়ে। তাই ক্লাস বন্ধ করে বসে থাকতে হয়। এছাড়াও ছাত্র-ছাত্রীদের বসার জন্য পর্যাপ্ত আসন ব্যবস্থাও নেই।

বিদ্যালয়টির অফিস সহকারী বলেন, আশে পাশের প্রায় সব বিদ্যালয়ে সরকারি উদ্যোগে পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। অন্যান্য স্কুলের চেয়ে আমাদের স্কুলের রেজাল্ট ভালো। আমাদের ছাত্রের চেয়ে ছাত্রী বেশি, তারপরও উপস্থিতির হার সন্তোষজনক। কিন্তূ আমাদের বিদ্যালয়টি এখনো বঞ্চিত, ছোঁয়া লাগেনি অবকাঠামো উন্নয়নের।


বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূরুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষ সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে ক্লাসে বসতে হয়, অনেকটাই হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এছাড়া বেঞ্চ সংকটে থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়তে হচ্ছে নানা সমস্যায়। তিনি আরো বলেন, প্রতি বছরই শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল অর্জন করছে। কিন্তু অবকাঠামোগত ভালো ব্যবস্থা না থাকায় অভিভাবকরা তাদের ছেলে মেয়েদের ভর্তি করাতে চায় না। যতটুকু অবকাঠামো তা আমাদের নিজ অর্থায়নে করা।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও বাউসা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সাইদুর রহমান ভুট্টু বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে অকল্পনীয় উন্নয়ন ঘটেছে। আমার বাউসা ইউনিয়নের প্রায় সব প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তুু আমাদের ফতেপুর বাউসা উচ্চ বিদ্যালয়ে এখনও তেমন কোন উন্নয়ন হয়নি। আমি এ প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর বার বার ছাত্র-ছাত্রী, অবিভাবক এবং শিক্ষক কর্মচারীর অভিযোগ শুনতে হচ্ছে। বিষটি আমি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্জ শাহারিয়ার আলম এমপি কে অবগত করেছি।

উল্লেখ্য, টিনের ছাউনি জরাজীর্ণ, বৃষ্টির পানিতে ক্লাসের অনুপোযোগী শ্রেণী কক্ষ, বর্ষাকালে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে পানি জমে ফলে খেলাধুলায় বিঘ্ন ঘটে। এছাড়াও বিদ্যালয়টির বাউন্ডারি না থাকায় খেলার মাঠ গরু ছাগলের চারণভূমিতে পরিনত হয়। বিধায় অতিব জরুরী ভিত্তিতে বিদ্যালয়টির খেলার মাঠ সংস্করণ এবং বাউন্ডারি সহ ভবন নির্মাণের জোর দাবি জানিয়েছেন, ছাত্র-ছাত্রী, অবিভাবক, শিক্ষক কর্মচারী সহ এলাকাবাসী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *