
নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার আওয়াতাধীন বাংলাদেশ শিশু সৈনিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ একরামুল হকের বিরুদ্ধে ক্ষমতা অপব্যবহার করে তথ্য গোপন করে ভুয়া তথ্য দিয়ে বিদ্যালয়টিকে জাতীয়করণের অভিযোগ উঠেছে।
নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলাধীন বাংলাদেশ শিশু সৈনিক বিদ্যালয়টি বিগত ২০০৯ ইং সালের ২৩ই এপ্রিল নর্থ বেঙ্গল কিন্ডার গার্ডেন এন্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুল সোসাইটি, রংপুর কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন সনদপ্রাপ্ত হয়; যাহার রেজিষ্ট্রেশন নং-রাজ-এস-১০৪। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত চলমান ছিলো। স্থানীয় জনগণের সার্বিক সহযোগিতায় নীতিমালার আলোকে প্রতিষ্ঠিত হয়ে সভাপতি কর্তৃক যথানিয়মে ৪জন শিক্ষক (১) মোঃ একরামুল হক, প্রধান শিক্ষক (২) মোঃ জাহিদুল ইসলাম সহকারী শিক্ষক, (৩) মোঃ সাজেনুর ইসলাম সহকারী শিক্ষক, (৪) মিন্নাতারা আক্তার সহকারী শিক্ষক; নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত করার মধ্য দিয়ে ২০১৩ সালের ২০ শে জানুয়ারি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক সরকার বিদ্যমান বিভিন্ন প্রকৃতির বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ এবং কর্মরত শিক্ষকদের চাকুরী জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রজ্ঞাপন জারি করেন। জাতীয়করণের প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত বিদ্যালয় সমূহের সম্পদ, অবকাঠামো অবস্থা, পাঠদান পরিস্থিতি, শিক্ষকের যোগ্যতা, নিয়োগ পদ্ধতি বাস্তব যাচাইয়ের মাধ্যমে অধিগ্রহণের উপযুক্ত বিদ্যালয় ও কর্মরত শিক্ষকগণের চাকুরি সরকারি করণের বিষয় সুপারিশ প্রদানের উদ্দেশ্যে উপজেলা কমিটি ২০১৩ ইং সালের ৩ই ফেব্রুয়ারি যাছাইকালে সংযুক্ত ছক “খ”ফরমে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ একরামুল হকের দেখানো হয়েছে ২০১২ ইং সালের ১৫ ই মে তারিখে; যাহা সম্পূর্ণ সাজানো কাগজপত্রের গরমিল রয়েছে বলে সহজে অনুমেয়। আরো উল্লেখ্য যে, উল্লেখিত তারিখে “খ” ফরম পূরণ খুব প্রেরণকালে মোঃ একরামুল হক পূর্বের শিক্ষকগণের অজান্তে স্বীয় স্বাথ হাসিলের উদ্দেশ্যে দুর্নীতির আশ্রয়গ্রহণ পূর্বক প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষকের নাম রদবদল করে, প্রধান শিক্ষকের নিকট আত্মীয় মোছাঃ লিপি আক্তার, এসএসসি-২০১১ ও মোছাঃ শাহানাজ আক্তার, এসএসসি-২০১০ কে ২০১২ইং সালে নিয়োগ দেখানো হয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত কাজে অক্লান্ত পরিশ্রম করে অপরাধো কোন কারণ ছাড়াই ২জন প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষকের নাম রদবদল করা হয়। শুধু তাই নয়, ছক-“গ” ফরমে ২০০৯ইং সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ের সম্পত্তি ও দায়দেনা সংক্রান্ত তথ্যে জমির দলিল নং-৪৭১৯ দাতা (১) নুরুল হক (২)মোঃ জাহিদুল ইসলাম (৩) মোঃ এজাবুল হক, জমির পরিমান ৩৫ শতক, যাহা সম্পূর্ণ ভুয়া। ইহা মুলত মন্থনা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর নামে ২০০৯ ইং সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ৪৬ শতক জমি রেজিস্ট্রিকৃত; যাহার দলিল নং-৪৭১৯। কিন্তু এই দলিলের জমি বাংলাদেশ শিশু সৈনিক বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে দেখানো হয়েছে ৩৫ শতক। বিদ্যালয় সঞ্চয়ী হিসাবঃ (১) রিজার্ভ ফান্ড হিসাব নম্বর- ০২১৮১২৯ এ দশ হাজার টাকা ও সাধারন ফান্ডে হিসাব নম্বর- ১৬৪৭৩ এতে পাঁচ হাজার টাকা; যাহা সম্পূর্ণ ভূয়া। ইহা মন্থনা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের হিসাব নম্বর- ১৬৪৭৩; এতে ত্রিশ হাজার সাতশত পঞ্চাশ টাকা ও ০২১৮১২৮ এতে পঞ্চাশ হাজার টাকা। পূর্বের মন্থনা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বর্তমান কর্মরত শিশু সৈনিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ একরামুল হক দূর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে উপজেলা যাচাই কমিটিতে ভুয়া তথ্য প্রেরণ করেন। এমনকি প্রধান শিক্ষক একরামুল হক ভুয়া তথ্য দিয়ে দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ করে নিয়োগ বাণিজ্য করে। এবং মন্থনা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সোনালী ব্যাংকের হিসাব নং- ১৬৪৭২ ও ০২১৮১২৯ হতে মোট ৮০,৭৫০/- টাকা এবং অগ্রনী ব্যাংকের হিসাব নং- ০২০০০০৫৮৭৮৫৭৮ হতে মোট ৭,৮৩,২৫০/- টাকা রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ করে।
জানতে চাইলে নীলফামারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এ.এম শাহাজাহান সিদ্দিক বলেন, “আমাকে বিষয়টি নিয়ে কেউ জানায়নি, ফলে আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলাম না। আমি অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো”।