
আমার প্রাণের বাংলাদেশ গর্বিত, কারণ এদেশে এঁকে বেঁকে বয়ে চলেছে শত শত নদ নদী হাজার হাজার খাল বিল এজন্যই এদেশকে বলা হয় নদী মাতৃক দেশ।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এদেশের নদ নদী গুলো আজ প্লাস্টিক ও আবর্জনা দিয়ে ভরপুর।
ছোট বড় নদনদী ও খাল আজ শক্তিশালী মানুষের কাছে জিম্মি হয়ে হারিয়ে যাচ্ছে । যে যার মতো শক্তি দিয়ে দখল করে ভরাট করে উধাও করে দিচ্ছে এই প্রাকৃতিক নেয়ামত, হারিয়ে যাচ্ছে যুগ যুগ ধরে নদীমাতৃক দেশ খেতাব পাওয়া ঐতিহ্য।
নদী পথে বানিজ্য সুবিধা হওয়ার কারণে নদীর কুল ঘষে গড়ে উঠেছে অনেক শিল্প কারখানা।
কারখানার মাহাজনরা যদিও প্রথমে সম্পূর্ণ নিজেদের জায়গায় কারখানা গুলো স্থাপন করেছিলেন, কিন্তু তারা নিজেদের সুবিধার্থে ইটের কুচি নদীতে ফেলে নদীর তীর ভরাট করে অবৈধভাবে বাড়িয়ে নিচ্ছে তাদের কারখানার আয়তন। তাই দিন দিন এভাবে নদীর সীমানা কমতে কমতে নদী ছোট হয়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে জোয়ার ভাটার টান । আর যে নদীতে জোয়ারের পানি সঠিক ভাবে প্রবেশ করতে পারে না সে নদীতে দিন দিন চর পড়ে নদী মজে যায় ।
পানি থেকে শহর বাঁচাতে প্রয়োজন দুটি জিনিস
১ নদী খনন
২ ড্রেন প্রশস্ত ও পরিষ্কার করণ
নদী খনন এর মাধ্যমে শহরকে পানি মুক্ত অর্থাৎ বৃষ্টির সময় শহরের নোংরা পানি মুক্ত সচল ও শুকনো ও পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব।
মজে যাওয়া নদী খনন করে, নদীর গভীরতা বৃদ্ধি ও নদী প্রশস্ত করলে বৃষ্টির পানি নদীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে ।
একটি এক লিটার পানির মধ্যে যদি দেড় লিটার পানি রাখতে চান, তবে তা কখনোই সম্ভব হবে না । বরং পানি বেশি হওয়ার কারণে আপনাকে ভিজিয়ে দেবে আপনার পানি, কিন্তু যদি দুই লিটার পানির বোতলে দেড় লিটার পানি রাখেন তবে তা সম্ভব।
ড্রেন প্রশস্ত ও পরিষ্কার করলে পানির চলাচল ভালো হবে। খুব শীঘ্রই শহরের পানি ড্রেন এর মাধ্যমে শহরের পার্শ্ববর্তী নদী ও খালে পৌঁছাতে পারবে। তাহলে শহরকে পানি মুক্ত অর্থাৎ বৃষ্টির সময় শহরের নোংরা পানি মুক্ত সচল ও শুকনো ও পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব।
আমার দেখা মতে প্রতিটি শহরের ড্রেন এর লাইন শহরের পার্শ্ববর্তী নদী ও খালের সাথে সংযুক্ত।
অনেক টাকা ব্যয়ে শহরের রাস্তাগুলো দিন দিন উচু হচ্ছে তারপরও বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে শহর । এর একমাত্র কারণ হচ্ছে , বৃষ্টির পানি সঠিক সময়ে সঠিক ভাবে নদীতে পৌঁছাতে পারছে না। আর যদিও ড্রেনের ময়লার সাথে যুদ্ধ করে কোন রকম নদীতে পৌঁছাচ্ছে কিন্তু নদীর গভীরতা ও প্রশস্ততা দিন দিন কমে যাওয়ায় নদী নিজের গভীরে পর্যাপ্ত পানি রাখার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে । তাই আমার যুক্তি হলো, রাস্তা উঁচু না করে সেই বাজেট দিয়ে, নদী নিচু করুন। তাহলে নদীও বাঁচবে, পরিবেশও বাঁচবে, শহরের মানুষও সুন্দর ভাবে জীবন যাপন করতে পারবে।
লেখক
এফ এম বুরহান
শিক্ষার্থী
সরকারি সুন্দরবন আদর্শ কলেজ, খুলনা।
সদস্য
বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফরম