
শহিদুল ইসলাম, প্রতিনিধিঃ
(২১ সেপ্টেম্বর) বৃহস্পতিবার, দুপুর ২ টায় সিলেটের শাহপরান (রহ.) মাজারে বার্ষিক ওরস উপলক্ষে গিলাফ চড়িয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনের প্রধান ও সম্প্রীতি বাংলাদেশ এর সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল)।
বুধবার থেকে শুরু হওয়া তিনদিন ব্যাপী বার্ষিক ওরস শুক্রবার ভোররাতে আখেরি মোনাজাত ও পরে শিরনী বিতরণের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে।
এতে দেশ-বিদেশের দলবেঁধে আসা লাখো লাখো
ভক্তদের উপস্থিতি ও হাতে হাতে নানা রঙয়ের গিলাফ দেখা গেছে। মুখে মুখে উচ্চারণ হচ্ছে পবিত্র কালেমা ও ‘লালে লাল–বাবা শাহপরাণ।
এসময় ডা.স্বপ্নীল বলেন হযরত শাহপরান (রহ.) আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি দেশ ও বিশ্ব শান্তি কামনা করে প্রার্থনা করেছেন ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দেশ বাসীর জন্য দোয়া ও মোনাজাত করেছেন।
শাহ পরান ছিলেন ১৪শ শতাব্দীর একজন সুফি সাধক। তিনি শাহজালালের বোনের ছেলে। তার জন্ম ইয়েমেনের হাদ্রামাউত অঞ্চলে এবং তিনি ছিলেন শাহজালালের ৩৬০ আউলিয়ার মধ্যে অন্যতম। তিনি তার মামা শাহজালালের সাথে ভারতবর্ষে আসেন। সেখান থেকে তিনি সিলেট শহরে আসেন। তার মাজারও সিলেট জেলায় অবস্থিত।
শাহ পরাণের পূর্ব পুরুষগণ মুলত বোখারা শহরের অধিবাসী ছিলেন। তার উধ্বতন ৪র্থ পুরুষ শাহ জামাল উদ্দিন, বোখারা হতে ধর্ম প্রচারের জন্য প্রথমে সমরখন্দ ও পরে তুর্কিস্থান এ এসে বসবাস করেন। বংশ সূত্রে শাহ পরাণের পিতা মোহাম্মদ ও একজন খ্যাতনামা ধার্মিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার মাতা শাহ জালালের আত্মীয় সম্পর্কে বোন ছিলেন। সে হিসেবে শাহ পরাণ হচ্ছেন শাহ জালালের ভাগ্নে। শাহ পরাণের বয়স যখন ১১ বৎসর তখন তিনি তাঁর পিতাকে হারান। পরবর্তিকালে তার আত্মীয় প্রখ্যাত দরবেশ সৈয়দ আহমদ কবিরের কাছে তিনি ধর্ম শিক্ষায় দীক্ষিত হন। সেখান থেকে তিনি আধ্যাত্মিক দীক্ষা লাভে নেশাপুরের বিখ্যাত দরবেশ পাগলা আমীনের স্মরণাপন্ন হয়ে আধ্যাত্মিক শিক্ষায় দীক্ষিত হন। শাহ জালাল যখন বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রার উদ্যোগ নেন। এ সময় তিনি (শাহ পরাণ) খবর পেয়ে মামার সাহচার্য লাভের আশায় হিন্দুস্থানে এসে মামার সঙ্গী হন।[১] সিলেট বিজয়ের পর শাহ জালালের আদেশে তিনি ইসলাম প্রচারের কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন। শাহ পরাণ সিলেটের নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ সহ বিভিন্ন স্থানে ইসলাম প্রচার করেন। পরবর্তিকালে অলৌকিক ঘটনা প্রকাশ হলে শাহ জালালের নির্দেশে তিনি (শাহ পরাণ) সিলেট শহর হতে ছয় মাইল দূরবর্তি দক্ষিণ কাছ পরগণাস্থিত খাদিম পাড়া বর্তমান নাম খাদিম নগর এলাকায় এসে ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে বসতি স্থাপন করেন এবং এখানেই জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত ইসলাম প্রচার করে বর্তমান মাজার টিলায় চির নিদ্রায় শায়িত হন।