এম শাহজাহান মিয়া শেরপুর প্রতিনিধিঃ
২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটকে কেন্দ্র করে সিগারেটের দাম বাড়িয়েছেন শেরপুরের ব্যবসায়ীরা। সিগারেটের শলাকাপ্রতি ২ টাকা আর প্যাকেট প্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে বিক্রি করছেন দোকানদার ও হকাররা। জেলা শহরের বিভিন্ন খুচরা দোকান ঘুরে দেখা গেছে, সবচেয়ে দামি বেনসন অ্যান্ড হেজেসের প্রতি শলাকা সিগারেট বিক্রি হচ্ছে ১৬ টাকায়। যা কিছুদিন আগেও ছিল ১৪ টাকা। অর্থাৎ প্রতি শলাকায় ২ টাকা বেড়েছে। এতে ৩০০ টাকার প্রতি ২০ শলাকার সিগারেট প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়। একই ভাবে গোল্ডলিফ প্রতি শলাকা বিক্রি হচ্ছে ১২ টাকায়। যা এক মাস আগেও ছিল ১১ টাকা। ২২০ টাকার প্রতি প্যাকেট সিগারেট বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। এসব ব্র্যান্ডের প্যাকেটপ্রতি সিগারেটের দাম বেড়েছে ২০ টাকা।কোম্পানিগুলোর দাবি, সরকার নির্ধারিত দামেই সিগারেট বিক্রি হচ্ছে। তারা নতুন করে দাম বাড়ায়নি। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজেটের পর থেকে সিগারেটের দাম বাড়বে। এ জন্যই হয়তো গাড়ি থেকে প্রয়োজনের তুলনায় সিগারেট কম দেওয়া হয়। ফলে বড় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বেশি দামে সিগারেট কিনতে হচ্ছে। বেশি দামে কেনার কারণে বেশি দামে বিক্রি করছি। তাদের অভিযোগ, বড় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম বাড়িয়ে শত শত কোটি টাকা মুনাফা তুলে নিচ্ছে। পাশাপাশি সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। জানতে চাইলে থানা মোড়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানদার বলেন, গত কাল থেকে সিগারেটের দাম বাড়তি। কোম্পানি থেকে পাঠানো গাড়িতে মাল এখন খুব কম পাই। ১০ প্যাকেটের অর্ডার দিলে ২-৩ প্যাকেট দেয়। তারপরও নানা কথা বলেন, বাধ্য হয়েই বড় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কিনতে হয়। এছাড়াও ক্রেতারা যেন ক্রয়ের সময় ঝামেলা না করে কোম্পানির পক্ষ থেকে বৃদ্ধি মূল্য তালিকার স্টিকার দোকানে দোকানে সেটে দিয়েছে। সজবরখিলা এলাকার দোকানদার মমিন মিয়া বলেন, গোল্ডলিফ, রয়েল, নেভি, ডারবি ও স্টারসহ সব ধরনের সিগারেটের দাম বেড়েছে। বেশি দামে বিক্রি করি বলে কত মানুষের ঝাড়ি খাচ্ছি। গরিব মানুষ, পেটের দায়ে পান-সিগারেট বিক্রি করি।
খরমপুরের ক্রেতা আনিস সরকার বলেন, গোল্ডলিফ সিগারেট আগে খুচরা বিক্রি হতো প্রতি শলাকা ১১ টাকায়। এটা এখন ১২ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এ বিষয়ে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো অব বাংলাদেশের (বিএটিবিসি) শেরপুর জেলার ডিস্ট্রিবিউটর বজলুর রহমান বলেন, এটা প্রায় বিশ বছর ধরে হয়ে আসছে যে, যেদিন থেকে সংসদে বাজেট নিয়ে আলোচনা শুরু হয় তখন থেকেই এর দাম কোম্পানী বাড়িয়ে দেয়। এটাই অনেক বছর ধরে হয়ে আসছে। আর এটা শুধু শেরপুরে নয় সারাদেশে এক যোগে হয়েছে।
এ বিষয়ে জাপানী টোবাকো কোম্পানীর ট্যারিটরি কর্মকর্তা জামিল হোসেন জানায়, আমার এখান থেকে বাড়ানোর কিছু নেই, এখানে সেন্ট্রালি হয়ে আসে। চালান আপলোড-ডাউনলোডের মাধ্যমে দর নির্ধারণ হয়। এছাড়া বাজেটে কী বাড়ছে বা বাড়েনি তা আমার জানা নাই। এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর শেরপুরের সহকারী পরিচালক মো. রুবেল মাহমুদ বলেন, বাজেটের আগেই কোন কিছুর দাম বাড়ানো কোন অবস্থাতেই বৈধ না। যদিও এটা শুধু শেরপুরেই নয়, সারা বাংলাদেশে হচ্ছে। তবে ভোক্তা অধিকার আইনে অভিযান হবে কী তা আমার উদ্ধতনের উপর নির্ভর করছে। নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!