
উজানের ঢল ও বর্ষণে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়তে থাকায় সিরাজগঞ্জে ভয়াবহ বন্যার আশংকা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল বন্যা কবলিত হয়েছে এবং আরো নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
বর্তমানে যমুনা নদীর বিপদসীমার ৪৯ সেঃ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির চাপে পৃথক দুটি স্থানে রিং বাঁধ ও কাঁচাসড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় ভাটি এলাকার ৭টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এতে এ অঞ্চলের বহু পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (হেডকোয়ার্টার) নাসির উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আলোকিত বাংলাদেশকে জানান, গতকাল রাতে পানির চাপে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি এলাকার বড়াল নদীর রাউতারা রিং বাঁধ (ডুবন্ত) ভেঙ্গে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে ভাটি এলাকার অনেক পরিবার এবং সিরাজগঞ্জ সদরের বিয়ারাঘাট এলাকায় নির্মিত একটি কাঁচা সড়ক পানির চাপে ভেঙ্গে ভাটি এলাকার ৭টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এ দুটি ভাঙ্গন স্থান দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করছে। প্রায় ২ মাস আগে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বিয়ারাঘাট থেকে আদিবাসী গ্রাম পর্যন্ত নির্মাণাধীন সড়কটি পানির চাপে ভেঙ্গে গেছে। এতে ভাটি এলাকার বিয়ারাঘাট, পাইকপাড়া, ঘোনাপাড়া ও রামগাঁতীঁ গ্রামসহ ৭টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এসব গ্রামের বহু পরিবার এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে। এছাড়া কয়েকদিন ধরে উজানের ঢল ও বর্ষণে যমুনা নদীতে পানি বেড়েই চলেছে।
এতে যমুনার তীরবর্তী সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর, চৌহালী ও সদর উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে চরাঞ্চলের বাদাম ও পাটসহ বিভিন্ন ফসল ডুবে গেছে এবং অনেক এলাকার কাঁচা সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যমুনা নদী তীরবর্তী ওই ৫টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল বন্যা কবলিত হয়ে পড়ায় অনেক অসহায় পরিবার এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে। তবে এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ভয়াবহ বন্যার আশংকা রয়েছে।
এদিকে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলছেন, যমুনা নদীর পানি আরো ২/৪ দিন বাড়তে পারে। তবে বন্যার আশংকা থাকলেও এখনো তেমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। অন্যদিকে নদী তীরবর্তী বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন শুরু হওয়ায় ঘরবাড়ি, ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। চৌহালী, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুরসহ ভাঙ্গন কবলিত স্থানে ভাঙ্গন রোধে জিও ব্যাগ নিক্ষেপ করা হচ্ছে। এছাড়া বাঁধসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে নজর রাখাও হচ্ছে। এছাড়া বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানানো হয়েছে।