মোঃ মোমিন ইসলাম সরকার দেবীগঞ্জ পঞ্চগড় প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার ফকিরগঞ্জ বাজারে গত ১মে রাত ৯টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে মেসার্স আপন বীজ ভান্ডার থেকে ১১১ বস্তা ভারতীয় ধানবীজ আটক করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুশফিকুল হালিম। অভিযানের খবর পেয়ে মেসার্স আপন বীজ ভান্ডারের সত্ত্বাধিকারী আনিসুর রহমান লেবু পালিয়ে যান। পরে ধানবীজ গুলো ফকিরগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য কমলেশ চন্দ্র রায় ও রাধাঁনগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু জাহিদের জিম্মায় রাখা হয়। পরে এ ঘটনায় আটোয়ারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরজাহান খাতুন থানায় মামলা দায়ের জন্য একটি এজহার দাখিল করলেও ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও মামলাটি অজ্ঞাত কারণে রেকর্ড করা হয়নি।
পরে সোমবার (০৮ মে) বিকেলে জেলা বীজ ও প্রত্যয়ন এজেন্সী কর্মকর্তা আব্দুল মতিনের অভিযোগের ভিত্তিতে আটোয়ারী উপজেলার ফকিরগঞ্জ বাজারের মেসার্স আপন বীজ ভান্ডারে অভিযান চালায় পঞ্চগড় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। পরে দেশী ধান বীজ ভারতীয় মোড়কে প্যাকেটজাত করার অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪৪ ধারা ভঙ্গের দায়ে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন পঞ্চগড় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক পরেশ চন্দ্র বর্মণ।
এসময় রাধাঁনগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু জাহিদ সহ জেলা পুলিশের একটি দল উপস্থিত ছিলেন।
পঞ্চগড় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক পরেশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, দেশী ধানবীজ ভারতীয় প্যাকেটে প্যাকেটজাত করে কৃষকের সাথে প্রতারণায় দায়ে এক জরিমানা করা হয়েছে। মাঝে তিন দিন ছুটি থাকার কারণে এ ব্যাপারে অভিযান করতে দেরি হয়। তবে জব্দ করা ধানবীজ গুলোর বিষয়ে আগামী ৯ মে উপজেলা সার, বীজ মনিটরিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ হবে। তারাই ভাল বলতে পারবেন এ ব্যাপারে।
আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বলেন, আসলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বীজ আইনে যে মামলার এজহার দায়ের করেছিলেন তা ছিল নন কগনিজেন্স (বিচারবিহীন) মামলা। ওই আইনে মুলত কোন মামলা হয়না। এ কারণে মামলা এন্ট্রি করা হয়নি। তবে সোমবার বিকেলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর একটি অভিযান করেছে। সেখানে জরিমানাও হয়েছে বলে জেনেছি। এ ব্যাপারে জেলা বীজ ও প্রত্যয়ন কর্মকর্তা ভাল বলতে পারবেন।
আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুশফিকুল হালিম বলেন, আসলে আমরা সেদিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ১১১ বস্তা ভারতীয় ধানবীজ আটক করি। পরে সেগুলো ফকিরগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য কমলেশ চন্দ্র রায় ও রাধাঁনগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু জাহিদের জিম্মায় রাখা হয়। এ ঘটনায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার মামলা কেন নেয়া হয়নি বা নেয়নি তা ওসি মহোদয় ভাল বলতে পারবেন। শুনেছি জেলা বীজ ও প্রত্যয়ন এজেন্সী কর্মকর্তা আব্দুল মতিনের অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা ভোক্তা অধিকার দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেছে। আটক ধান বীজ কি করা হবে তা বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি ভাল বলতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *