মোঃ ইকবাল মোরশেদ স্টাফ রিপোর্টার।

কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলায় উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয় এক স্কুল ছাত্রকে বেদম প্রহার করেছেন ৩ জন শিক্ষক।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা ;
মোঃ জাবেদ হোসেন (১৭) এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী। তাকে লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে, সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ জানুয়ারি বিদ্যালয়ের বার্ষিক বনভোজন থেকে ফেরার পথে একটি সাউন্ড বক্স নষ্ট হয়। এ নিয়ে মনপালের শিক্ষার্থীরা উত্তরদা গ্রামের শিক্ষার্থীদের দোষারোপ করেন।
পরে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়া হয়।

এদিকে, সোমবার দুপুরে বিদ্যালয় ছুটির পর উত্তরদা গ্রামের শিক্ষার্থী মোঃ জাবেদ হোসেনকে মনপালের কয়েকজন শিক্ষার্থী পূনরায় সাউন্ড বক্সের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে উভয় পক্ষ কথাকাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়ে।

এ সময় স্থানীয় লোকজন তাদেরকে বুঝিয়ে বিদায় করেন। কিন্তু বেলা সাড়ে তিনটার দিকে জাবেদ হোসেনসহ ৫/৬ জন শিক্ষার্থী মাহফিলে যাওয়ার সময় মনপালের ১৫/১৬ জন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের অদূরে চন্দনা বাজারের দক্ষিণে ব্রীজের কাছে বাঁধা দেয়।

এ সময় ধাক্কাধাক্কিতে উত্তরদা গ্রামের জাবেদ হোসেন, শাহারুখ কবির, মোহন হোসেন, ফারহান, মোহনসহ কয়েকজন ছাত্র আঘাতপ্রাপ্ত হয়। কিছুক্ষণ পর উত্তরদা স্কুলের শিক্ষক ইয়াসিন মিয়া ও তাজুল ইসলাম রাস্তায় গিয়ে শিক্ষার্থী জাবেদ হোসেনকে ধরে কিলঘুষি মারতে মারতে বিদ্যালয়ে নিয়ে যায়।
সেখানে তাকে বেত ও বাঁশের কঞ্চি দিয়ে বেধড়ক পিটায়। পরে তাদের সাথে পিটুনিতে যোগ দেন অপর শিক্ষক মাসুদ হাসান।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, শিক্ষক ইয়াসিন মিয়া ২০১০ সালে মেয়ে কেলেঙ্কারিতে লক্ষণপুর স্কুলের চাকুরী হারায়। তিনি স্কুল চলাকালে শিক্ষার্থীদের সামনে সিগারেট খান।
ছাত্রদের দিয়ে দোকান থেকে পান-সিগারেট আনেন। এছাড়াও তিনি শিক্ষার্থীদের অশ্লীল গালিগালাজ করেন।

অপর শিক্ষক তাজুল ইসলাম ২০১৭ সালে কৃষ্ণপুর নিজ বাসায় কাজের মেয়ের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় এলাকাবাসীর কাছে হাতেনাতে ধরা পড়ে।
এ ঘটনায় তিনি এক বছর তিন মাস কারাবন্দি থাকেন।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, এসব ঘটনা ছাড়াও এ পর্যন্ত ২ শিক্ষকের হাতে অনেক শিক্ষার্থী আঘাতপ্রাপ্ত হয়। কিন্তু ২ শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এ বিষয়ে উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইদ্রিস মিয়া বলেন, মারামারিতে দুই গ্রামের শিক্ষার্থীরাই আঘাতপ্রাপ্ত হয়। আমরা বিদ্যালয়ে বসে উভয় পক্ষকে মিমাংসা করে ছাত্রদের বলেছি যাতে অভিভাবকদের বিষয়টি না জানানোর জন্য। আর পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য এক ছাত্রকে পিটিয়েছেন শিক্ষকরা।

এ বিষয়ে লাকসাম উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রসাদ কুমার ভাওয়াল বলেন, অভিযোগের আলোকে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উত্তরদা ইউপি চেয়ারম্যান ইমাম হোসেন জানান, বিষয়টি শুনেছি। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *