নিউজ ডেক্সঃ

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ধাপের খাল নামেএকটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি খাল দখল করে পুকুর খনন করায় পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে চারটি গ্রামের ফসলি মাঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে আসন্ন আমন চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

এ দিকে খাল বন্ধ করে পুকুর খননকারীদের কবল থেকে খাল রক্ষার পাশাপাশি জলাবদ্ধ ফসলি জমিতে কৃষকরা যাতে আমন চাষ করতে পারে সে ব্যবস্থা নিতে চার গ্রামের কৃষকরা গণ স্বাক্ষরিত লিখিত আবেদন তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মেজবাউল করিমসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে দিয়েছেন।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, ১৯৮০ সালে ফসলি জমির পানি নিস্কাশন এবং শুল্ক মৌসুমে সেচ সুবিধার জন্য উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের কাস্তা গ্রাম খেকে উত্তর মথুরাপুর গ্রামের ধাপের ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ধাপের খালটি সরকারিভাবে খনন করা হয়। এতে ওই এলাকার ফসলি জমির জলাবদ্ধতারোধ, সেচ সুবিধা, বর্ষা মৌসুমে নৌ-চলাচলের মতো নানা সুবিধা পাচ্ছিলেন এলাকাবাসী। সেই সুবিধা স্থায়ী করতে পরবর্তীতে সরকারি অর্থায়নে আরও দুই দুই বার খালটি পুনর্খনন করে পানি প্রবাহ সচল রাখা হয়।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর মথুরাপুর গ্রামের মৃত দৈয়ম আলীর প্রভাবশালী দুই ছেলে তালিম উদ্দিন ও আব্দুল আলিম তাদের বাড়ির পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে চলা ওই ধাপের খালটির বেশকিছু অংশ দখল করে পুকুর খনন করেন। এতে কাস্তা, বেত্রাশিন, ওয়াশীন ও উত্তর মথুরাপুর গ্রামের ফসলি মাঠের পানি প্রবাহের পথ স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়েছে। যার ফলে ওই ৪ গ্রামের প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে ভয়াবহ জলাবদ্ধত সৃষ্টি হয়ে বর্ষাকালীন বোনা আমন ও রোপা আমন চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

ওয়াশীন গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, সরকারি খাল দখল করে পুকুর খনন করায় ওই সকল মাঠের প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে হাঁটু পানি জমে আছে। ফলে আমরা জমিগুলোতে কোনোভাবেই আমন ধানের আবাদ করতে পারছি না এবং পানি নিষ্কাশন ছাড়া আবাদ করাও সম্ভব নয়।

এ ছাড়া কৃষক ইউনুছ আলী, ইসমাইল হোসেন, গোলাপ হোসেন, বাচ্চু সরকারসহ ভুক্তভোগী কৃষকেরা খাল দখলদারদের উচ্ছেদ করে খালের পানি প্রবাহের পথ নিশ্চিত করে তাদের শত শত হেক্টর ফসলি জমির জলাবদ্ধতা নিরসন করে তাদের জমি চাষযোগ্য করার দাবি জানান।

এ দিকে কৃষকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার (২৯ মে) দুপুরে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান, তাড়াশ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নূরী তাসনিম উমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

অবশ্য খাল দখল সম্পর্কে আব্দুল আলিম বলেন, ওখান দিয়ে খাল থাকলেও জায়গাটি আমাদের জমা জায়গা। তাই পুকুর খনন করেছি।

এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো, মেজবাউল করিম বলেন, সোমবার সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ একটি টিম সরেজমিনে ওই এলাকা পরিদর্শন করেছে। আর কৃষকদের ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *