তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর তানোরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সম্পাদক আব্দুল্লাহ্ আল-মামুনের নেতৃত্বে গড়ে উঠা একটি দুষ্টচক্র (এমপিবিরোধী) ফের রণেভঙ্গ দিয়েছে। তারা এমপিবিরোধীতার নামে নৌকার বিরোধীতা করে এখন বাঁবুইভেঁজা। তৃণমুলের তোপের মুখে ভিক্ষা চাইনা কুত্তা সামলাও পরিস্থিতে পড়ে হতাশার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে।
জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন আগামি ১৬ জুন অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে গত ৪ জুন শনিবার উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্দ্যোগে সম্মেলন প্রস্তুত্তি সভায় যোগদিতে এসে সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সম্পাদক আব্দুল আল-মামুন তৃণমুলের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের রোষাণলে পড়ে মঞ্চ থেকে পালিয় গিয়েছে।ইতমধ্যে সম্মেলন ঘিরে সভাপতি গোলাম রাব্বানী, সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-মামুন,মেয়র ইমরুল হক ও সাইদুর রহমানের মধ্যে চতুরমুখী দন্দ ও প্রচন্ড মতবিরোধ সৃস্টির গুঞ্জন উঠেছে,দেখা দিয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া। প্রতিনিয়ত তাদের নিয়ে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ভিন্ন রুপ নিচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সুত্র জানায়, আসন্ন সম্মেলনে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে সভাপতি গোলাম রাব্বানী মেয়র সাইদুরকে নিয়ে ও সম্পাদক মামুনকে মাইনাস করে এবং মামুন মেয়র ইমরুল হককে নিয়ে সভাপতি রাব্বানীকে মাইনাস করে নিজ নিজ অবস্থান থেকে গোপণে সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরীর কাছে নিজের ভুল শিকার করে সমঝোতার আশায় নানা তৎপরতা শুরু করেও সাংসদের কাছে থেকে তেমন কোনো সাড়া না পেয়ে দুপক্ষের রণেভঙ্গ ও স্বপ্ন উবে গেছে। আর এই জন্য তারা নিজেরা পরস্পরকে দোষারপ করছে বলে নেতাকর্মীদের মাঝে আলোচনা রয়েছে। অন্যদিকে মেয়র ইমরুল হক ও সাইদুর রহমান তারা কেউ আর সভাপতি-সম্পাদককে কোনো টাকা দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছে। অথচ পৌর নির্বাচনে তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিজয়ী হলে তারা সভাপতি-সম্পাদককে এমপিবিরোধী সকল কর্মসুচিতে আর্থিক সহায়তা দিবেন, তবে তারা এখন পিছুটান দিয়েছে। এদিকে মেয়র সাইদুরের ঘনিষ্ঠ একটি সুত্র বলেন, কতো টাকা দিবে ঢাকায় বাড়ি ভাড়া, গাড়ির তেল, বাড়ির বাজার এতো কি সম্ভব।
এদিকে এই দুই নেতার গোপণে পরস্পরবিরোধী অবস্থানের খবর ছড়িয়ে পড়লে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যর সৃস্টির পাশাপাশি এসব ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সুত্রপাত হয়েছে। তবে সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন উভয়েই এসব গুঞ্জন ভিত্তিহীন ও প্রতিপক্ষের অপপ্রচার দাবি করে বলেন, তৃণমুলের মতামতের ভিত্তিত্বে নেতৃত্ব নির্ধারণ করা হলে তারা আবারো দায়িত্ব পাবেন বলে শতভাগ আশাবাদি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতাকর্মী বলেন, তাদের উপর বিশ্বাস নাই। ব্যক্তি স্বার্থের জন্য এরা সব পারে। কারণ সাংসদের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে সভাপতি গোলাম রাব্বানী এক সময় প্রকাশ্যে মামুনকে দুর্নীতিবাজ, বেঈমান-বিশ্বাসঘাতক, নিমকহারাম ইত্যাদি অভিযোগ করেন। ওদিকে একবার সম্পাদক মামুন সাংসদের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে প্রকাশ্যে গোলাম রাব্বানীকে মোনাফেক, বেঈমান, জামায়াত-বিএনপির দালাল, দুর্নীতিবাজ ও বিশ্বাসঘাতক অ্যাঙ্খায়িত করেছে। এমনকি উপজেলা নির্বাচনে মামুন দুবার বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে রাব্বানীর পরাজয় নিশ্চিত করেছে। এখন আবার তারা দুইজন গাঁটছড়া বেঁধে এবার সাংসদের বিরুদ্ধে নানা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। এর মাধ্যমেই বোঝা যায় রাজনীতির মাঠে তারা কতটা দেউলিয়া হয়ে পড়েছে।
তৃণমুলের ভাষ্য, দলীয় পদ ব্যবহার করে নানা সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ ও নিজেদের আদর্শিক দাবি করেন। কিন্ত্ত নির্বাচন এলেই তারা নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নেন। তারা বলেন, এবারের কাউন্সিলে এসব বেঈমানদের কোনো স্থান নাই। এবার তারা নতুন নেতৃত্ব চাই।
জানা গেছে, তানোর উপজেলা আওযামী লীগের রাজনীতিতে স্থানীয় সাংসদ এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি
গোলাম রাব্বানীর মধ্যে
দীর্ঘদিনের বিরাজমান কোন্দল-মতবিরোধের কারণ অনুসন্ধান ও অবসান ঘটাতে কেন্দ্রীয় কমিটি উদ্যোগ নিয়ে গত বছরের ৮ নভেম্বর উভয় পক্ষকে সাংগঠনিক নেতাকর্মীসহ ঢাকায় তলব করে। এরই প্রেক্ষিতে গত বছরের ৭ নভেম্বর শনিবার দিবাগত রাতে উভয় পক্ষ নেতাকর্মীদের নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রাজশাহী ত্যাগ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সুত্র জানায়, গত বছরের ৮ নভেম্বর রোববার সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী প্রায় শতাধিক সাংগঠনিক নেতাকর্মী নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করেন এই বহরে এমন নেতাকর্মীও ছিল যারা এতোদিন গোপণে রাব্বানী-মামুনের পক্ষ ছিল তারা প্রকাশ্যে এমপির পক্ষে চলে যায় এতে তারা চরম বিপাকে পড়ে। এই দৃশ্যে দেখে কার্যালয়ের সামনে রাব্বানী ও মামুন একে অপরকে দোষারোপ করে বাকবিতন্ডতায় জড়িয়ে পড়ে এক পর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে রাব্বানী সেখান থেকে চলে আশার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলেও মামুন একাই কার্যালয়ে প্রবেশের চেস্টা করলেও সঙ্গে কোনো নেতাকর্মী না থাকায় নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে বাধা দিয়ে সেখান থেকে ফেরত পাঠায় বলে সুত্রটি নিশ্চিত করে। রাজশাহী জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের নেতা মিজানুর রহমান জুয়েল বলেন, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে না গেলে বুঝতেই পারতাম না কোথায় এমপি মহোদয় আর কোথায় রাব্বানী-মামুন। তিনি বলেন, এমপি মহোদয় সুমুদ্রের তিমি আর রাব্বানী-মামুন কুঁয়োর ব্যাঙ এই তুলনায় চলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *