জেলা প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জ তাহিরপুরে বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি জনজীবন বিপর্যস্ত প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন গ্রাম বন্যাদুর্গত মানুষজন তাদের গৃহীতপালিত গবাদিপশু সহ পরিবার পরিজন নিয়ে পরেছেন চরম ভোগান্তিতে। সেই সাথে বন্যার চরম অবনতি হওয়ার পরও উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো খোলা থাকায় স্কুল পড়ুয়া কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এমন দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াও ছোট ছোট নৌকা নিয়ে পাঠা দানের স্কুলে যাচ্ছে। যারফলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটনা ঘটে প্রাণ হারানোর আতংকে দিন কাটছে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের। পাশাপাশি প্রবল বজ্রপাত ঘটার ফলে এমন দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া হাওরাঞ্চলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাময়িকী বন্ধ রাখা দাবি জানিয়েছেন স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানাযায়, আজ (১৬ জুন বৃহস্পতিবার) সকাল থেকেই সীমান্ত নদী যাদুকাটা দিয়ে বিপদ সিমার ১.৬ মি.মি উপর দিয়ে ঢলের পানিতে আবাও তাহিরপুর উপজেলায় নতুন করে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতির দিকে যাচ্ছে। জেলার সবকয়টি নদ নদীর পানি বিপদ সিমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যারফলে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার নতুন নতুন গ্রাম। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) আরও জানান, এমন ভারি বৃষ্টিপাত ও দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আরও ২/৩ দিন থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে তাহিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা সহকারী অফিস কারুজ্জামান শেখ জানান, উপজেলার ১৪৪ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেশিরভাগই বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে সকালেই ৮ টি বিদ্যালয়ে পানি ডুকায় এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান সাময়িকীভাবে বন্ধু ঘোষণা করা হয়েছে।
জানাযায়, গত ১০/১২ দিনের টানা বৃষ্টিপাত ও পহাড়ীঢলে তাহিরপুর উপজেলার নির্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে শতাধিক গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে। সেই সাথে রাস্তাঘাট ডুবে গিয়ে জেলা সদর সুনামগঞ্জের সাথে গত ৪/৫ দিন ধরে তাহিরপুর উপজেলার সড়ক যোগাযোগ সম্পুর্নভাবে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। প্রবল বর্ষণে মেঘালয় পাহাড় থেকে নেমে আসা সীমান্তের বিভিন্ন ছড়া দিয়ে প্রবল স্রোতের পানি প্রবেশ করছে। বন্যায় প্লাবিত উপজেলার সদর হাসপাতালের নিচ তলা সহ প্রায় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এদিকে যাদুকাটা নদীর পানির প্রবল স্রোতের নদী বাড়ের ঘাগটিয়া, রাজারগাও, লামাশ্রম, বিন্নাকুলী, গরকাঠি, ঘাগড়া, পাঠানপাড়া, ছড়া, সোহালা, মোদেরগাও, মাহাতাবপুর, দক্ষিনকুল, আনোয়ারপুর, বালীজুরি, লোহাছুরা গ্রাম ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মিয়ানমার, মনবেগ গ্রাম সহ দুই উপজেলার প্রায় আর্ধশতাধিক গ্রাম ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে। জেলার তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের শক্তিয়ারখলা, আনোয়ারপুর, বালিজুরীসহ আরও কয়েকটি স্থান প্লাবিত হওয়ায় যান চলাচল বন্ধ আছে। বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিক সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্যায় প্লাবিত হয়ে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এসব এলাকার গ্রামীণ ছোট ছোট রাস্তা ঘাট, ব্রীজ, কার্লভাট ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে সড়ক যোগাযোগ ব্যাবস্থা প্রায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এদিকে যাদুকাটা নদীর প্রবল স্রোতের তোড়ে বিন্নাকুলী বাজার সংলগ্ন যাদুকাটা নদীর উপর নির্মাণাধীন শাহ আরেফিন(রঃ) ও অদ্বৈত সেতুর গার্ডার ভেঙে পরে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাহান কবির বলেন, প্রবল বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢলে বর্তমানে তাহিরপুর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি ব্যপক অবনতি দিকে যাচ্ছে। তাহিরপুর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাহিরপুর উপজেলায় পর্যটকবাহী সকল নৌযানের চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। উপজেলায় স্কুল কাম আশ্রয় কেন্দ্র ৩৩ টি ও ৩ আশ্রম কেন্দ্রসহ মোট ৩৩ টি আশ্রয় কেন্দ্র সার্বক্ষনিক খোলা রয়েছ। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো বেন্যাদূর্গত পরিবার আশ্রম কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়নি। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে তাহিরপুর উপজেলার বন্যাদুর্গতদের জন্য ৩৩ মে.নট খাদ্য সামগ্রী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দকৃত খাদ্য সামগ্রী প্রতিটি ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বন্যাদুর্গতদের বিতরণের কার্যক্রম চলছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গন বন্যাদুর্গত মানুষদের মধ্যে উক্ত খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। এছাড়া বন্যাদুর্গত মানুষের যেখানে সমস্যায় কন্ট্রোলরুমের দেয়া মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ করেন ইউএনও রাহান কবির। সেই সাথে ব্যপক বজ্রপাত ঘটায় এই দূর্যোগপূর্ণ পরিবেশে উপজেলার সকলেই ঘর থেকে বাহির না হওয়া সহ মনে সাহস নয়ে বন্যা মোকাবেলার আহবান জানিয়েছেন।# আমির হোসেন জেলা প্রতিনিধি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *