নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারের নারী উদ্যোক্তা জাকিয়া সুলতানাকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মথুরাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদ রানাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ সাঈদ-উর-রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানা যায়, বদলগাছী উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা জাকিয়া সুলতানাকে অনৈতিক প্রস্তাব ও যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হওয়ায় চেয়ারম্যান মাসুদ রানাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। আর ওই প্রজ্ঞাপনের চিঠিও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।

নারী উদ্যোক্তার করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চেয়ারম্যান মাসুদ রানা গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে থেকে ওই নারী উদ্যোক্তাকে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করে আসছেন। তিনি মুঠোফোনে এবং বেশ কিছু চিঠির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দিতেন। ওই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কেড়ে নেন এবং কিছু গোপন তথ্য ডিলিট করে দেন। পরে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে মোবাইল ফোনটি তিনি ফেরত দেন। তিনি একজন বিবাহিত নারী এবং দুটি যমজ কন্যা সন্তান আছে। চেয়ারম্যানের এমন প্রস্তাবের ফলে কর্মক্ষেত্রে ও সাংসারিক কলহের সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে বিবাহ বিচ্ছেদও ঘটেছে। এমন অবস্থায় ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে কাজ এবং সামাজিক চলাচলে বাধার সৃষ্টি হয়েছে ও নানাভাবে হেয়প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে।

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে গত ১৩ জুন জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছিলেন।

অভিযোগকারী উদ্যোক্তা জাকিয়া সুলতানা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে কাজ করতে বিভিন্ন সময়ে চেয়ারম্যান মাসুদ রানা আমাকে কুপ্রস্তাবসহ যৌন হয়রানি করে আসতো। চেয়ারম্যানের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে এক পর্যায়ে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার, নওগাঁ জেলা প্রশাসকসহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বিভাগে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তকারী দল যৌন হয়রানির সত্যতা পাওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করায় আমি সন্তুষ্ট নয়। তাকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করলেই আমি সন্তুষ্ট হবো।

সদ্য বরখাস্তকৃত ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানার কাছে এবিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করার চেষ্টা করিলে মোবাইল বন্ধ থাকায় কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *