আহসান হাবীব স্টাফ রিপোর্টারঃ-



নোয়াখালী সোনাপুর-আটকপালিয়া-চেয়ারম্যানঘাট সড়কে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) দ্বিতল বাস সার্ভিস চালুর একদিনের মাথায় পরিবহন মালিক সংগঠনের বাধার মুখে বন্ধ হয়ে গেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে চালুর একদিন পর বাস সার্ভিস বন্ধ হওয়ার বিষয়টি সমাধানে বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) বিকালে জেলা প্রশাসক বৈঠক আহ্বান করেছেন।

এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এর প্রতিবাদে ১ জুলাই (শুক্রবার) বেলা ১১টায় সুবর্ণচর উপজেলার হারিছ চৌধুরীর বাজার প্রধান সড়কে অবরোধের ডাক দিয়েছেন স্থানীয়রা। এতে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন ছাড়াও নানা শ্রেণি-পেশার লোকজন অংশ নেবেন বলে জানান স্থানীয় এলাকাবাসী ।

জানা যায়, নোয়াখালী চেয়ারম্যানঘাট সোনাপুরের দূরত্ব মাত্র ৪৫ কিলোমিটার। এই সড়কপথে চলাচলকারী যাত্রীদের জন্য ভালো মানের কোনো বাস ছিলনা। স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বুধবার (২৮ জুন) দুপুরে এই সড়কে বিআরটিসির ২টি দ্বিতল বাস সার্ভিস চালু করা হয়।
সোনাপুর শহর এলাকা থেকে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে এক ঘণ্টা পরপর বাস ছেড়ে যাওয়ার সময় নির্ধারণ করা হয়। সোনাপুর থেকে চেয়ারম্যানঘাট ভাড়া ধরা হয়েছে ৪০ টাকা এবং সোনাপুর থেকে আটকপালিয়ার বাজার ২০ টাকা। একই সাথে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ভাড়া ফ্রি করা হয়।

সোনাপুর বিআরটিসি বাস ডিপো কার্যালয়ে সার্ভিসটির উদ্বোধন করেন নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক ও সুবর্ণচর উপজেলা চেয়ারম্যান এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম সামছুদ্দীন জেহান, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, সুবর্ণ সুপার সার্ভিস পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের বাধার মুখে বন্ধ করে দিতে হয়েছে বিআরটিসি বাস সার্ভিস।

সুবর্ণচরের বাসিন্দা আশরাফুল হক চৌধুরী বলেন, জেলা শহর মাইজদী থেকে চেয়ারম্যানঘাট চলাচলের কোনো ভালো যানবাহন নেই। শহরের সোনাপুর এলাকার বাস ডিপো থেকে যে বাসগুলো সুবর্ণচর রুটে চলাচল করে, তা খুবই পুরোনো ও নিম্নমানের। বেশির ভাগ বাসের ফিটনেস নেই। চালকেরাও অদক্ষ। কোনো গেটলক সার্ভিস নেই। অনেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ১০০ থেকে ১২০ টাকায় চলাচল করেন।

তিনি বলেন, বিষয়টি দ্রুত সমাধান না হলে এই সড়কে মালিক সমিতির কোনো বাস চলতে দেবেন না স্থানীয়া।

সোনাপুর বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির লোকজনের বাধার মুখে নিরাপত্তার স্বার্থে নতুন এ সার্ভিস বন্ধ করতে বাধ্য হই। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
মো. রাজু মোল্লা, বিআরটিসি সোনাপুর বাস ডিপোর ম্যানেজার
বাধা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে সোনাপুর বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. সামছুল হক সোহেল বলেন, এ রুটে বর্তমানে প্রায় ২৫টি বাস চালু রয়েছে পর্যাপ্ত বাস থাকার পরও বিআরটিসি বাস চালু হওয়ায় লোকশানের মুখে পড়তে হবে তাদের। এতে বাস ও সিএনজির অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে। তাই সবাই মিলেই বিআরটিসি বাসকে বাধা দেয়।

এদিকে বিষয়টি জানা মাত্রই বাধাদানকারী শ্রমিক নেতাদের খবর দেওয়া হয়েছে এবং তাদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *