বিশেষ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার
বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে জনবল নিয়োগে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে নৈশ প্রহরী পদে প্রার্থী মো. শরিফুল ইসলাম রানা, আয়া পদে প্রার্থী সারুল আক্তার ও নিরাপত্তা কর্মী পদে মো. সজিব মিয়া মঙ্গলবার বিকেলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আমির শাহ এর বিরুদ্ধে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে পৃথক তিনটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে তারা উল্লেখ করেছেন, তাদের সবাইকে ৩ লক্ষ করে টাকা দিতে হবে। নইলে ফলাফল সীট ও রেজুলিউশন খাতায় স্বাক্ষর করবেন না।
তারা আরো জানান, নৈশ প্রহরী পদে প্রার্থী মো. শরিফুল ইসলাম রানা ২ লক্ষ টাকা এবং আয়া পদে প্রার্থী সারুল আক্তার দেড় লক্ষ টাকা সভাপতিকে দিয়েছেন। বাকী টাকা না দিলে তাদেরকে নিয়োগ দেয়া হবে না।
তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে বিগত ৪ আগষ্ট ২০২২ইং তারিখে নিরাপত্তা কর্মী,নৈশ প্রহরী ও আয়া পদে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্টিত হয়। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় নিরাপত্তা কর্মী পদে মো. সজিব মিয়া,নৈশ প্রহরী পদে মো. শরিফুল ইসলাম এবং আয়া পদে সারুল আক্তার প্রথম হয়।
নিয়োগ বোর্ডের সদস্য ডিজির প্রতিনিধি তাহিরপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র সভাপতিকে নিয়েই স্বচ্ছভাবে করা হয়েছে। ফলাফল সীটে আমরা নিযোগ বোর্ডের ৪ জন সদস্য স্বাক্ষর করেছি। সভাপতিকে স্বাক্ষর করতে বললে তাহার পছন্দের প্রার্থীর নাম না থাকায় তিনি নামাজের কথা বলে বাহিরে চলে যান।
এ বিষয়ে নিয়োগ কমিটির সদস্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে পরীক্ষা অনুষ্টিত হয়। ফলাফল সীটে নিয়োগ বোর্ডের ডিজি’র প্রতিনিধি,প্রধান শিক্ষক,উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও অপর সদস্য লাউড়েরগড় আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষর করেছেন। এ অবস্থায় পরিচালনা কমিটির সভাপতির নিকট স্বাক্ষর করতে বললে তিনি নামাজের কথা বলে বাহিরে চলে যান।
নিয়োগ বোর্ডের অপর সদস্য লাউড়েরগড় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাইয়্যুম বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার যাবতীয় কার্যক্রম সভাপতিকে নিয়েই করা হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল সীটে তিনি আমাদেরকে বলেছেন স্বাক্ষর করার জন্য। এ লক্ষ্যে আমরা ৪ জন সদস্য স্বাক্ষর করেছি। এখন কি কারণে সভাপতি ফলাফল সীটে স্বাক্ষর করছেন না বিষয়টি তার কাছে বোধগম্য নয় বলে জানান।
বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, নিযোগ পরীক্ষার তৈরীকৃত প্রশ্নপত্রে স্বাক্ষর করে সভাপতি নিজে পার্শ্ববর্তী বাদাঘাট বাজারে গিয়ে ফটোস্ট্যাট করে নিয়ে আসেন। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষাও যথারীতি সুন্দরভাবে হয়েছে। নিয়োগ কমিটির ৫ সদস্যের মধ্যে আমরা ৪ জনে স্বাক্ষর করেছি। নিয়োগে বাছাইকৃতদের তালিকা দেখে স্বাক্ষর না করে নামাজের কথা বলে তিনি বাহিরে চলে যান। এখন তিনি বলছেন পূণঃ বিজ্ঞপ্তি দেয়ার জন্য। তিনি আরো বলেন, সভাপতি চাইলেই পূণঃনিয়োগ দিতে পারবেন না। পূণঃ নিয়োগ দিতে হলে নিয়োগ কমিটির সকল সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে হতে হবে।
বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আমির শাহ বলেন, মৌখিক পরীক্ষার সময় তাহাকে মার্ক দেয়ার সুযোগ না দিয়েই প্রধান শিক্ষক ও অপর সদস্যরা ফলাফলসীট তৈরী করেছেন।
এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রায়হান কবির বলেন,বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগের অনিয়মের বিষয়ে প্রার্থীরা ৩টি লিখিত অভিযোগ মঙ্গলবার বিকেলে জমা দিয়েছে। অভিযোগটি তদন্তক্রমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।