মাদকে ভাসছে মতিহার থানা অঞ্চল

জনতা ধরলো চোর, খবর দিয়েও আসলো না পুলিশ!

মাসুদ আলী পুলক : রাজশাহী মহানগরীর কাজলা অক্ট্রয় মোড়ের একটি দোকানে চুরি করা সময় হাতেনাতে এক চোরকে আটক করে দোকানী মোঃ মিজান উদ্দিন। এ সময় তার ডাক চিৎকারে আশপাশের দোকানী ও স্থানীয়রা এগিয়ে এসে চোর মোঃ আইনুল হককে (২৮) আটক করে স্থানীয়রা। পরে মুঠো ফোনে মতিহার থানার ওসিকে বিষয়টি জানানো হয়।

শুক্রবার (২২ জুলাই) রাত পৌনে ১১টায় মহানগরীর মতিহার থানাধীন কাজলা অক্ট্রয় মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

আটক চোর আইনুল হক একই থানার ডাসমারী পূর্বপাড়া এলাকার মৃত শহিদুলের ছেলে।

দোকানদার মিজান উদ্দিন ও লালন জানায়, তাদের দোকানে বাইরে রাখা মালামাল প্রায় চুরি হয়। তাই তারা দোকান বন্ধ করা পরও দুই পার্টনার পালাক্রমে দোকানের উপর নজর রাখে।

শুক্রবার রাত পৌনে ১১টার দিকে দোকান দেখতে এসে দেখেন একজন ব্যক্তি অনুমানিক ২হাজার টাকা মূল্যের কার্টুন চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। ওই সময় তাকে হাতেনাতে আটক করে মিজান। এ সময় তার হৈচৈ শুনে সেখানে ছুটে যায় মোড়ের অন্যান্য দোকানী ও স্থানীয়রা। সিদ্ধান্ত হয় পুলিশে সোপর্দ করার।

ফোন দেয়া হয় মতিহার থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই তাজ উদ্দিনকে। তিনি বলেন, ওসি স্যারকে একটা ফোন দিন।

এরপর মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আনোয়ার আলি তুহিন এর মুঠো ফোনে ফোন দিয়ে চোর সোপর্দ করার বিষয়টি জানানো হয়। তিনি বলেন, দেখছি।

রাত পৌনে ১১টা থেকে শুরু হয় অপেক্ষার পালা। ৫মিনিটের গন্তব্যে পৌছাঁতে সোয়া ১ঘন্টা পেরিয়ে গেছে পুলিশের। ঘড়ির কাটায় রাত ১২টা। মতিহার থানার সেকেন্ড অফিসার তাজ উদ্দিন ঘটনাস্থলে পৌঁছান চোরকে আটক করতে। এরই মধ্যে হতাশাগ্রস্থ জনতা চোরকে চা খাইয়ে সম্মানের সহিত বিদায় দিয়েছেন।

মোড়ের লোকজনকে এসআই তাজ উদ্দিন জানতে চান চোর কোথায় ? পাল্টা প্রশ্নের ছুড়ে দেয় জনতা সোয়া ১ঘন্টা পরে কেন ? উত্তরে তিনি বলেন ওসি স্যার আমাকে এক্ষুনি বললেন, আমি দেরি করিনি। সাথে সাথেই এসেছি।

স্থানীয় একাধিক দোকানী জানান, অক্ট্রয় মোড়ের একাধিক বাড়ি ও দোকানে এত বেশি চুরির হয়েছে। যা রাজশাহী মহানগরীর অন্য কোন মোড়ে হয় নাই। এর মধ্যে সবচাইতে বেশি চুরির ঘটনা ঘটেছে অক্ট্রয় মোড়ের রা:বি প্রাচির সংলগ্ন দোকান গুলিতে। এর মধ্যে হাতে গুনা কয়েকটা চোর আটক হয়েছে তা স্থানীয়দের সহযোগীতায়।

এর মধ্যে বুধবার (২০ জুলাই) দিবাগত রাতে পরিত্যাক্ত অবস্থায় একটি অটোরিক্সা উদ্ধার এবং একটি ভাংড়ির দোকান থেকে ৪টি অটোরিক্সার ব্যাটারী উদ্ধার করা হয়। সেটাও স্থানীয়দের সহযোগীতায়।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় একাধিক দোকানী জানান, রাজশাহী মহানগরীকে চুরি, ছিনতাই, সন্ত্রাস, জঙ্গী ও মাদক নিমূল করা সহ সকল প্রকার অপরাধমুক্ত রাখতে পুরো মহানগরীজুড়ে সিসি ক্যামেরার আওতায় এনেছেন আরএমপি পুলিশ কমিশনার মোঃ আবু কালাম সিদ্দিক মহাদয়। আরএমপি পুলিশের সুনাম ধরে রাখতে তার এই অক্লান্ত পরিশ্রম আজও অব্যাহত। সেই সময় চোর আটকে পুলিশের অনিহা খুবিই দুঃখ জনক ও হতাশা জনক!

একাধিক স্থানীয়রা জানান, পরো মতিহার থানা অব্জল মাদকে ভাসছে। এই অঞ্চলে মাদক বিরোধী কোন উল্লেখ যোগ্য অভিযান নেই মতিহার থানা পুলিশের। টুক টাক যা অভিযান হচ্ছে সেটা ডিবি পুলিশ ও র‌্যাবের। মাদক বিরোধী অভিযানে থানার কোন ভুমিকা নাই। এ নিয়ে উদ্বেগ আর উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছে উঠতি বয়সি কিশোর যুবকদের অভিভাবকেরা। এ অঞ্চলে এক প্রকার খোলা মেলা ভাবেই চলে মাদক বিক্রি ও সেবন এবং আইপিএলে জুয়ার রমরমা কারবার। এ নিয়ে খোদ থানা পুলিশের মধ্যেও অস্তোষ রয়েছে। অকপটে তারা আঙ্গুল তোলে ওসি’র দিকে। কারন মাদক বিক্রির এলাকাগুলোতে কোন কন্সটেবল, এএসআই এবং এসএই গেলেই রাগারাগি করেন ওসি। শুধু তাই নয়, হপ্তা এবং মাসোহারা তোলার সাথে জড়িত রয়েছে একজন কন্সটেবল, একজন এএসআই এবং একজন এসএই। তারা তিনজনই ওসি’র ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন বলে জানা গেছে।

এ নিয়ে বিস্তারিত আসছে পরের নিউজে….

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *