নরসিংদী জেলা থেকে



নরসিংদীরা রায়পুরার উপজেলা মির্জাপুর ইউনিয়ন ০৭ ওয়ার্ডের পিরিজ কান্দি গ্রামের সেন্টু প্রামাণিকের মেয়ে রিমা প্রামাণিকের (১৮)ভৈবর হউনাইটেড হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় গত ১১ জুলাই রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার হত্যাকারীদের বিচারের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে হয়েছে । তার হত্যা আজ মির্জাপুর ইউনিয়ন পিরিজকান্দি মাঠে হাজার হাজার মানুষের ঢল।


বন্দরনগরী ভৈরবের বেসরকারি হাসপাতাল ইউনাইটেড হাসপাতাল এন্ড আর্থোপেডিক সেন্টারের নার্স রিমা প্রমাণিকের (১৮) রহস্যজনক মৃত্যুতে দায়ের করা মামলায় হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হানিফুর রহমান সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সোমবার দায়ের করা অপমৃত্যু মামলায় আজ মঙ্গলবার ভোরে তাকে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হলেও পরে দুপুরে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।

আজ দুপুরে নিহত নার্স রিমা প্রামাণিকের বাবা সেন্টু প্রামাণিক বাদী হয়ে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হানিফুর রহমান সুমন (৪০), নার্স লিজাসহ (২৪) অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন।

সোমবার সকালে ভৈরব শহরের কমলপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত ইউনাইটেড হাসপাতাল এন্ড অর্থোপেডিক সেন্টার নামের ওই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে রিমা প্রামাণিকের (১৮) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রিমা নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের পিরিজকান্দি গ্রামের সেন্টু প্রামাণিকের মেয়ে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ২০৩ নং স্টাফ আবাসিক কক্ষে ফ্যানের সাথে ওড়না জড়িয়ে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেন রিমা। মৃত্যুর আগে রিমা প্রামাণিক একটি চিরকুটে “আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়”-এই কথা লিখে গেছেন বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।



মামলার এজাহার সূত্রে জানাযায়, নার্স রিমা প্রমাণিক দুই বছর যাবত ওই হাসপাতালে চাকরি করতেন। ঈদের তিনদিন আগে তিনি ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে যান। গত শনিবার ঈদের আগেরদিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফোন দিয়ে ঈদের দিন ডিউটি করতে তাকে হাসপাতালে আসতে বলেন।

ঈদেরদিন ডিউটি করে তিনি নার্সদের থাকার রুমে ঘুমিয়ে পড়েন। রোববার ঈদের রাতে কোন এক সময় হাসপাতালের কয়েকজন মিলে তাকে গলাটিপে হত্যা করে আত্মহত্যা হিসেবে প্রচার করে। পরে ভোরে নিহতের বাবাকে জানানো হয় তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। সোমবার সকালে পুলিশকে ঘটনাটি অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় ময়না তদন্তের জন্য।

নিহত নার্স রিমার বাবা সেন্টু প্রামাণিক জানান, রিমা ছুটিতে বাড়িতে ছিলো। শনিবার বিকেলে হাসপাতালের এমডি হানিফুর রহমান সুমন আমার মেয়েকে ফোন করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সোমবার সকালে হাসপাতাল থেকে রিমার মৃত্যুর সংবাদ জানানো হয়।

আমরা হাসপাতালে এসে আমার মেয়ের লাশ একটি কক্ষে শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পাই। যদি মেয়ে আমার আত্মহত্যাই করে থাকে, তবে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে কেনো নামানো হলো ? এ ছাড়া আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে এমন কি ঘটনা ঘটলো ?
তিনি দাবি করেন, পুলিশের সুরুতহাল রিপোর্টে রিমার যৌনাঙ্গে রক্তের দাগ রয়েছে। তার মেয়েকে ধর্ষণের পর গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল তিনি না বুঝে অপমৃত্যু মামলা করেছিলেন। আজ হত্যা মামলা করেছেন। তিনি তার মেয়ে হত্যার বিচার চান।

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. গোলাম মোস্তফা জানান, ঘটনাটি আত্মহত্যা না হত্যা, তা ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর বলা যাবে। নিহতের বাবা আজ থানায় দুজনকে আসামী করে একটি মামলা করেন। সেই মামলায় হাসপাতালের এমডি সুমনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *