আত্মশুদ্ধি, আত্মসংযম ও তাকওয়া অর্জনের মাস মাহে রমাদান। এ সময় মোমিন হৃদয়ে খেলে ইবাদতের ঢেউ। রমজানের অন্যতম একটি ইবাদত হচ্ছে সালাতুত তারাবি। এসময় হাফেজে কোরআনের মুখে উচ্চারিত ঐশী বাণীর সূললিত তেলাওয়াতে মসজিদ গুলো মূখরিত থাকে। আজকের আয়োজনে ঢাকা কলেজ পড়ুয়া ৪ জন হাফেজে কুরআনের তারাবি নামাজ পড়ানোর অভিজ্ঞতা ও আনুষঙ্গিক বিষয় তুলে ধরেছেন ঢাকা কলেজ প্রতিনিধি, মো: হাবিব হাসান মহন।

হাফেজ মাহমুদুল হক হাসান

মাহমুদুল হক হাসান

ঢাকা কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের এই শিক্ষার্থী এবছর নরসিংদীর জিপিইউএফপি সেন্ট্রাল জামে মসজিদ নরসিংদীতে তারাবী পড়াচ্ছেন। তার কাছে তারাবী পড়ানোর অভিজ্ঞতা ও মাহে রমজান কিভাবে কাটছে এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোরআন নাযিলের মাস মাহে রমাদান। ইবাদতের বসন্তকাল খ‍্যাত এই মাসটির অপেক্ষায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ বাকি ১১ মাস চাতক পাখির মত তাকিয়ে থাকে। বিশেষ করে কোরআনে হাফেজগন এ মাসের জন্য অধীর আগ্রহে প্রহর গুনে। আসলে তারাবি পড়ানোর অনুভূতি বলে বা লিখে প্রকাশ করার মতো না। কোরআনে হাফেজদের কাছে তারাবি হচ্ছে একটা আবেগ ও ভালোবাসার বিশেষ জায়গা। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় জলের মাছ যেমন পানি থেকে ওঠে পূনরায় পানিতে ফিরে গেলে প্রাণ ফিরে পায় তেমনিভাবে রমজান মাসে কোরআনে হাফেজগনও তারাবির মধ্যে, তেলাওয়াতের মধ্যে এক পরম তৃপ্তি অনুভব করেন। আমার কাছে রমজানের প্রতিটা মুহূর্তই উপভোগ্য মনে হয় নামাজ,জিকির,সেহরি ইফতার বিশেষ করে সালাতুত তারাবি, কিয়ামুল লাইল ও তিলাওয়াত কোনটাই কোনটার থেকে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।মহান রবের দরবারে লাখো কোটি শুকরিয়া যে তিনি আমাকে কোরআনে হাফেজ হিসেবে বছরের এই সময়টাতে দুনিয়ার সকল কর্মব্যস্ততাকে পাশ কাটিয়ে রবের সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একান্তে কিছু সময় কাটানোর সুযোগ করে দেন। মুসল্লিদের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসায় আপ্লুত হয়েছি বহুবার। তিনি আরো বলেন আমি যেন আমৃত্যু কোরআনকে বুকে ধারণ ও লালন করে যেতে পারি সেইসাথে এর শিক্ষানুযায়ী আমল করতে পারি সেজন‍্য সবার দোয়া প্রার্থী।

হাফেজ মো আব্দুর রহিম

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ১৭/১৮ সেশনের এই শিক্ষার্থী এবছর নবীনগর বাইতুন নূর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় তারাবী পড়াচ্ছেন। তার কাছে তারাবী পড়ানোর অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে তিনি বলেন তারাবীর নামাজ পড়ানোর মধ‍্যে হাফেজ সাহেবদের একরকম প্রশান্তি কাজ করে। আমার ব‍্যপারেও তাই। যখন তারাবী পড়াই তখন মনটা ভরে ওঠে। সর্বোপরি তিনি কুরআনের খেদমত যেন করে যেতে পারেন তার জন‍্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন।

হাফেজ মো ইব্রাহিম আহমাদ

ইসলাম শিক্ষা বিভাগের ১৯/২০ সেশনের এই শিক্ষার্থী এরমজানে বাইতুল জান্নাহ জামে মসজিদে তারাবী পড়াচ্ছেন। তারাবীহ পড়ানোর অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন বাবার বড় স্বপ্ন ছিল ছেলে হাফেজ হবে। আল্লাহ্ তায়ালা সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন এজন‍্য শুকরিয়া আদায় করেছি।

তিনি আরো বলেন তারাবীহ পড়ানোর সবচেয়ে বড় উপকার হল কুরআনের ইয়াদ পাকাপোক্ত করা। দীর্ঘ সাধনা করে যে গৌরব অর্জন করা হয় তারবী না পড়ানোর ফলেএকটা সময় সেটা ম্লান হয়ে যায়।সর্বোপরি এ রমজানে রহমতের প্রাচুর্যে ভরে ওঠুক আমাদের জীবন।

হাফেজ মো হাবিবুর রহমান

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ১৮/১৯ সেশনের এই শিক্ষার্থী তারাবীর ইমামতি করছেন কাশিমনগর বাইতুন নূর জামে মসজিদ খুলনায়। তার কাছে তারাবীর অনুভূতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন একজন হাফেজ পূর্ণ তৃপ্তি পায় তারাবীর নামাজ পড়ানোর মাধ্যমে। সত‍্যিকারার্থে এই অনুভূতি লিখে প্রকাশ করার মতো না।

শোকর আদায় করছি সৃষ্টিকর্তার কাছে এ জন্য যে তিনি আমাকে কুরানে হাফেজ বানিয়েছেন। তিনি তার শারীরিক সুস্থতার জন‍্যও দোয়া চেয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *