রাজশাহী মহানগরীতে ইমদাদুল হক নামের সেই ভুয়া পুলিশ অফিসার পরিচয়ে ছিনতাইকারীকে গণধোলাই দিয়েছে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) একদল মেধাবী শিক্ষার্থীরা।

ওই ভুয়া পুলিশ অফিসার নাম: মোঃ ইমদাদুল হক, তিনি রাজশাহীর দূর্গাপুর থানার চককৃষ্ণপুর গ্রামের ইব্রাহিম সরদারের ছেলে।
সোমবার (৫ জুন) দিনগত রাত ১টার দিকে মহানগরীর মতিহার থানাধীন কাজলা মোড়ে এই গণধোলাইয়ের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় মোঃ নাজমুল হক পলাশ জানান, সোমবার দিনগত রাতে ঢাকা হইতে রাজশাহীগামী হানিফ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি যাত্রীবাহি বাসের এক যাত্রীকে একদল শিক্ষার্থী কাজলার মোড়ে গণধোলাই দিচ্ছিলো। ওই সময় প্রচুর লোকজন জড়ো হয় সেখানে। এক পর্যায়ে মতিহার থানার একটি পুলিশ পিকআপ-ভ্যান নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। এ সময় এসআই সুভাষ শিক্ষার্থীদের শান্ত করেন এবং তাদের কবল থেকে ভুয়া পুলিশ অফিসার ইমদাদকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

মতিহার থানা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে রাজশাহী-গামী হানিফ এন্টারপ্রাইজ যাত্রীবাহি বাসে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ইমদাদ। পথে বাসের ভেতর রুয়েটের এক শিক্ষার্থীর সাথে অজানা বিষয় নিয়ে ঝামেলা হয় ইমদাদের। এক পর্যায়ে ইমদাদ ওই শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদাণ করে। বিষয়টি ওই রুয়েট শিক্ষার্থী তার সহপাঠি ও বন্ধুদের জানায়। বাসটি কাজলা পৌঁছানো আগেই ১৫/২০জন শিক্ষার্থী সেখানে জড়ো হয়। এক পর্যায়ে কাজলার মোড়ে বাসটি পৌঁছালে ইমদাদ বাস থেকে নামা মাত্রই তাকে গণধোলাই দিতে থাকে শিক্ষার্থীরা। পরে ৯৯৯-এর কল থেকে টহলরত অবস্থায় এসআই সুভাষ বিষয়টি জানতে পেরে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছেন এবং শিক্ষার্থীদের কবল থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে ইমদাদ জানায়, সে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে রাজশাহীতে ফিরেছে এবং জামিনের কাগজপত্র দেখায়। পরে তাকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দিয়ে তার আত্তীয় স্বজনদের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়।

উল্লেখ্য, গত (২৪ মে) বিকাল ৪টায় মতিহার থানার রুয়েট সংলগ্ন ফ্লাইওভরের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো রাহী (১৬) নামের এক নাবালক (হাফেজ)। ওই সময় সেখানে মোটরসাইকেল যোগে ইমদাদুল হক এসে থেমে স্কুল ছাত্র রাহীকে পুলিশ অফিসার পরিচয় দিয়ে মানিব্যাগ-সহ নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। একই সময় রাহী তার প্রতিবেশি ভাইকে নিয়ে তাকে অনুসরন করে এবং রাবি অভ্যান্তরে সিয়ামুন চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট তাকে ঢুকতে দেখেন। সেখানে রাহী হৈচৈ শুরু করলে সিয়ামুন চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট মালিক ভুক্তভোগী হাফেজকে বলেন, এখানে কোন ঝামেলা করা যাবে না। তুমি আইনের আশ্রয় নাও, প্রয়োজনে আমি সহযোগীতা করবো। পরে ওই ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করেন স্কুল ছাত্র (হাফেজ) রাহী। মতিহার থানার মামলা নং- ১৬/১১১, তাং-২৮/০৫/২০২৩।

এদিকে, ইমদাদের গণধোলাইয়ের খবর শুনে হাফেজ রাহী সন্তোশ প্রকাশ করে বলেন, আমি আল্লাহ্ পাকের দরবারে বিচার দিয়েছিলাম। তার নগদ রেজাল্ট তিনি দেখালেন। আরও একটি বিচার দিয়েছি। তা হলো আমার দেয়া মামলার জেরে অসাধু প্রতারক ইমদাদ তার ভাতিজা শান্তকে দিয়ে আমার এবং আমার মামলার স্বাক্ষী দূর্জয় এর বিরুদ্ধে ছিনতাই মামলা করেছে গত ০৫/০৬/২০২৩ তারিখে। এত বড় মিথ্যার আশ্রয়ের জন্য ভয়ংকর শাস্তির দাবি জানিয়েছি আল্লাহ্ পাকের দরবারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *