~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মোরশেদ রিমন সোনালী সময় ডেস্ক

শাহাদাতে কারবালা মাহফিল ও কেরাত সম্মেলন বন্ধে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। আজ শুক্রবার (১০জুন ২০২২ইং) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

এসময় তিনি বলেন প্রতি বছর মহররম মাসে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে দশ দিনব্যাপী শাহাদাতে কারবালা মাহফিল ও কেরাত সম্মেলন আয়োজন করে থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ। দীর্ঘ তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে চলে আসা এ মাহফিলে দেশি-বিদেশি ইসলামী স্কলার, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও উলামা মাশায়েখগণ জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করে আসছেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্যি যে দীর্ঘ এতো বছর ধরে অত্যন্ত সুশৃংখলভাবে পরিচালিত হওয়া এ মাহফিল আয়োজনে হঠাৎ করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম শাখা। এতে করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মনে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার সৃষ্টি হয়েছে। কি কারণে এরকম একটি ধর্মীয় আয়োজন হঠাৎ করে বন্ধের ঘোষণা প্রদান করা হলো তা সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানসহ আমার কাছেও ব্যাপক কৌতুহলের সঞ্চার করেছে। এ মাহফিলের আয়োজকগণ কখনো কোন সময় বর্তমান সরকার বিরোধী কোন ধরনের কার্যকলাপের সাথে যুক্ত ছিলেন না। তা সত্বেও হঠাৎ করে শাহাদাতে কারবালা মাহফিল ও কেরাত সম্মেলন বন্ধের নির্দেশ সরকারের বিরুদ্ধে ধর্মপ্রাণ আলেম সমাজকে ক্ষেপিয়ে দেওয়ার অপকৌশল কি-না তাও খুঁজে দেখতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাদেশে ইসলামের প্রচার ও গবেষণার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর একটি দূরদর্শী পদক্ষেপ। যাদের মূল কাজ হবে সারাদেশে ইসলাম ধর্মের প্রসার এবং ইসলামের মূল দর্শনসমূহ সাধারন জনগনের কাছে তুলে ধরা। কিন্তু শাহাদাতে কারবালা মাহফিল বন্ধের ঘোষনার মধ্য দিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন তাদের সে আদর্শ থেকে সরে এসেছে বলে অভিমত প্রকাশ করেন তিনি। সম্প্রতি অহেতুক বিভিন্ন ইস্যু সৃষ্টি করে সরকারকে জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে বেশ কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী। তাদের উদ্দেশ্য একটাই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করা। ইসলামিক ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম শাখা কর্তৃক শাহাদাতে কারবালা মাহফিল বন্ধের ঘোষণা সে ষড়যন্ত্রের অংশ বিশেষ কি-না সে বিষয়ে প্রশ্ন রাখেন সুজন। তিনি বলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মূল কাজ যদি হয় ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসার তাহলে কেনো সুদীর্ঘ এতো বছর ধরে চলে আসা শাহাদাতে কারবালা মাহফিল বন্ধ করা নির্দেশ প্রদান করবে তারা। তাহলে আমরা কি ধরে নেবো শস্যের মাঝেই কোন ভূত লুকিয়ে আছে? তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক শাহাদাতে কারবালা মাহফিল বন্ধ করার নির্দেশনা অবিলম্বে প্রত্যাহার করার জন্য ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তিনি আরো বলেন নগরীর জমিয়তুল ফালাহ মসজিদটি জাতীয় মসজিদ হিসেবে বহুল পরিচিত। এখানে প্রতিদিন শত শত মুসল্লি নামাজ আদায় করে থাকে। একটু উদ্যোগ গ্রহণ করলে এ মসজিদটিকে ইসলামি গবেষণা ও চর্চা কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা যেতো। কিন্তু ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সেদিক দিয়ে খুব বেশি নজর আছে বলে মনে করেন না তিনি। এছাড়া বিশাল আয়তন নিয়ে অবস্থিত চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী পাহাড়তলী হাজী ক্যাম্পটি দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন অবহেলায় পড়ে রয়েছে। রাত্রে যেখানে মাদক সেবন ও অন্যান্য অসামাজিক কর্মকান্ডের আড্ডা বসে। হাজী ক্যাম্পটির সংস্কার ও আধুনিকায়ন করে চাইলে সেখানে একটি অত্যাধুনিক ইসলামি সম্মেলন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা যায়। যেখানে দেশ বিদেশের ইসলামি গবেষক ও উলামা মাশায়েখগণ তাদের লব্দকৃত জ্ঞান ইসলামের প্রচার ও প্রসারে কাজে লাগাতে পারেন। তাই ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে ইসলামী আর্দশ ও মূল্যবোধের লালন পালনে মনযোগী হওয়ার অনুরোধ জানান সুজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *