মোঃ আব্দুস সবুর, (বালিয়াডাঙ্গী)ঠাকুরগাঁও, প্রতিনিধিঃ
বিদ্যালয় ছুটির পর বাড়ী ফেরার পথে মারপিটের শিকার হয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল গফুর। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে বিদ্যালয়ের পাশে শির্ক্ষাথীদের সামনে ঘটে যাওয়ার এমন জঘন্য ঘটনার প্রতিবাদ এবং জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বুধবার দুপুরে মানববন্ধন কর্মসূচীর আয়োজন করে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ।

তবে মানববন্ধন ঠেকাতে ক্লাশ বন্ধ করে দিয়ে বিদ্যালয়টি দুপুরের আগেই ছুটি দিয়ে দেন প্রধান শিক্ষক মুজাহারুল ইসলাম।

বুধবার দুপুর ২টার সময় বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গেলে মানববন্ধন আয়োজন করা কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, আমরা স্যারকে মারপিটের সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচীর আয়োজন করি। ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে স্কুলের সামনের রাস্তায় দাড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু হেড স্যার আগেই বিদ্যালয়ে ক্লাশ হবে না বলে আমাদের সকলকে ছুটি দিয়ে দেন।

বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক গোলাম রব্বানী বলেন, শিক্ষককে মারপিটের ঘটনার বিষয়ে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আমরা শিক্ষকরা সকলেই মিলে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে আলোচনায় বসি। এরই মধ্যে বিদ্যালয়ের মাঠে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধন করার জন্য উপস্থিত হচ্ছিল। এ সময় কৌশলে প্রধান শিক্ষক মানববন্ধন কর্মসূচী বন্ধ করতে শিক্ষার্থীদের দ্রুত বিদ্যালয় থেকে চলে যাওয়ার জন্য বলেন এবং বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করেন।

অভিভাবক ফজর আলী আলী বলেন, একজন শিক্ষককে মারধর করে এলাকার পরিবেশ নষ্ট করেছে। আমরা এটির সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার চেয়ে মানববন্ধন করতে চেয়েও পারিনি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কৌশলে আজকে মানববন্ধনটি বন্ধ করেছেন।

তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজাহারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতিসহ আমরা বসে স্থানীয় ভাবে মীমাংসা করার চেষ্টা করছি। আগামী শনিবার দিন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মানববন্ধন করলে ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত হবে মনে করে শিক্ষার্থীদের ছুটি প্রদান করা হয়েছে। মানববন্ধন যদি করতে চায়, আগামীকালও করবে। এতে কোন বাধা নেই।

এদিকে বালিয়াডাঙ্গী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চাড়োল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল গফুর বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ের পাশের ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান আমাকে বেধরক মারপিট করেছে। আমি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছি।

মারধরের কথা অস্বীকার করে ব্যবসায়ী আতিউর রহমান মুঠোফোনে জানান, স্কুল থেকে ফেরার সময় ওই শিক্ষকের সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছে। আমি তার গায়ে হাত তুলিনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আপনারা তদন্ত করতে পারেন।

শিক্ষকের স্ত্রী আলফাতুন নেছা বলেন, আমার স্বামী একটু সুস্থ্য হলেই আমরা আইনের আশ্রয় নেব। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির মারপিটের ঘটনাটি ঘটেছে। এটির সঠিক বিচার দাবি করছি আমরা।

ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বালিয়াডাঙ্গী শিক্ষক সমিতির সভাপতি বাবুল হোসেন বলেন, শিক্ষকদের উপর কোন ধরণের অমানবিক নির্যাতন আমার সহ্য করবো না। খুব শ্রীঘ্রই প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান ও বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি খায়রুল আনাম বলেন, এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *