নিউ ডেক্সঃ

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পরিণত বয়সে এক সর্বনাশের মুখোমুখি পড়েছিলেন। ১৯৩৪ সালের শ্রাবণ মাসে ৭৩ বছর বয়সে তিনি লিখলেন, ‘প্রহর শেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্র মাস/ তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ।’ কোন সে রূপবতীর চোখে চোখ রেখে ভস্ম হলেন তিনি? কে জানে! আমের বনের দোলা, ঝরে পড়া মুকুল, মঞ্জরিত শাখা আর মৌমাছিদের গুঞ্জরিত পাখা যেন বয়ে এনেছিল বসন্তের নিশ্বাস। কোনো এক চৈত্রের গল্পকে তিনি সাজিয়ে তুলেছেন শ্রাবণ মাসে। আহা, এতটাই সর্বনাশ!

চৈত্রের প্রখর খরদাহ ও ঝড়ের তাণ্ডবতায় সর্বনাশের বাঁশি কখন যে বেজে ওঠে, কে জানে! তবুও চৈত্র মানে বসন্তের অপরূপ বৈভব। প্রকৃতির মাতাল আলোড়নের মাস চৈত্র।

প্রতি বছরের মতোই ফাল্গুনী বাহারে-চাঞ্চল্য শেষে আসে চৈতালী উন্মত্ততা। ঝড়ো হাওয়ায় শিলা বৃষ্টি তছনছ করে সারা দেশ। উতলা বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টির মিলিত সঙ্গীতে ভিজে যায় গ্রামীণ ও নাগরিক জীবনের যাবতীয় নান্দনিক বিন্যাস। প্রকৃতিতে তাণ্ডবতার প্রচ্ছন্ন ছাপ ফেলে ঝরে পড়ে নব-অঙ্কুরিত আমের মুকুল, কচি শাখা, সতেজ পত্রালী। তথাপি চৈত্র ধ্বংসের চিহ্নে অঙ্কিত হয় জীবনেরই আলপনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *