স্ট্যাইলের জনক
চলচ্চিত্রের মহানায়ক সালমান শাহর ২৬ তম প্রয়ান বার্ষিকী আজ
*কবি এস. পি. সেবু*
(Regal Communication Specialist of Sylheti Nagri Language)
সুন্দর সুঠাম দেহের অধিকারী লাজুক লাজুক মায়াবী চেহারা আর মোনায়েম চাউনী।
প্রথম দর্শনে যাকে আপন করতে ইচ্চা জাগে জনমনে, তিনিই আমাদের বাংলা চলচ্চিত্রের হীরকযুগের আধুনিক মহানায়ক সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট সিনেমা অভিনেতা, সুস্থ সংস্কৃতির উদ্ভাবক ও স্ট্যালের জনক শহীদ সালমান শাহ।
আজ থেকে ২৬ বছর পূর্বে ১৯৯৬ সালে ৬ই সেপ্টেম্বর শুক্রবার প্রাতরাশে ঢাকার ইস্কাটন প্লাজায় একদল পরিকল্পিত সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে (শহীদ) নিহত হন তিনি।
বাংলাচলচ্চিত্রের অলিখিত ব্যাকরণ খ্যাত ছায়াছবি প্রেমিদের হৃদয়ের স্পন্দন সালমান শাহই মাত্র ৪ বছরের ফিল্মিস ক্যারিয়ারে নিজেকে ও ঢাকাইয়া চলচ্চিত্রকে প্রতিষ্টিত করেছিলেন সর্ব্বোচ্চ জনপ্রিয়তার স্বর্ণ শিখরে।
হয়ে উঠেছিলেন কিশোর-কিশোরী তরুন-তরুনীদের কাছে অনুসরণযোগ্য ক্রেজ। ১৯৯৬ সালে তাঁর শহীদ হওয়ার সংবাদ টিভি, রেডিও,পত্রিকা, ম্যাগাজিন, টেলিযোগাযোগ মাধ্যামে প্রচারিত হতে না হতে স্থবির হয়ে গিয়েছিল সারা দেশ। অলস্য ভাব সৃষ্টি হয়েছিল শহর থেকে পাড়া মহল্লার সকল কর্মকান্ডে।
অজানা আতংক আর বিশ্বাস অবিশ্বাসের কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে সর্বস্তরের মানুষ। দেশব্যাপী শোক আর প্রতিবাদের ঝড় ছড়িয়ে পড়ে যায় টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, তামাবিল থেকে সুন্দরবন।
খুনিরা সালমান শাহকে খুন করে তৎতকালীন প্রশাসনের সহযোগীতায় ঘা ঢাকা দেয় ঘটনাস্থল থেকে। তদন্তের নামে সিলগালা করা হয় সালমানের বাসভবন ইস্কাটন প্লাজার বাসা।
দশদিন পর খুনের আলামত সংগ্রের বিষয়টি জাতির কাছে অত্যান্ত রহস্যময় মনে হয়।
এই দশদিনে খুনি চক্র প্রশাসনের নেতৃত্বে খুনের সিংহভাগ আলামত ধ্বংশ করে দেয় যাতে ভবিষ্যতে এই পরিকল্পিত হত্যার বিচার সালমান অনুসারীরা না পায়।
সালমান পরিবারের চোখে ধুলো দিয়ে, দেশবাসীকে ইন্দ্রজালে বন্ধী করে, রাষ্ট্র ও প্রশাসনযন্ত্রকে
জিম্মিকরে, হাসপাতালের ডাক্তার নার্সদের ক্রয়করে দুই দুইবারের ময়নাতদন্ত রিপোর্টকে
খুনের পরিবর্তে আত্মহত্যা (সুইসাইড) বলে গোয়েবলসীয় মিথ্যাচার করে খুনিচক্র।
সালমান পিতা ম্যাজিস্ট্রেট কমরুদ্দিন চৌধুরী সন্তান হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখেন। কিন্তুু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস তিনি ২০০২ সালে চলেযান না ফেরার দেশে।
সুযোগ বুজে খুনিরা কমরুদ্দিন চৌ. এর মৃত্যুকে টার্নেল হিসাবে ব্যাবহার করে আদালতে সালমান শাহর মামলা নিষ্কিয় করে দেয়।
তার পর ইতিহাসের পতন! কত পোষ্টারিং, বক্তব্য, সভা, মহাসভা, প্রেসবিফিং, সমাবেশ, ভালোবাসা, আবেগ, কান্না, মিশিল, মিটিং সব চাপা পড়ে যায় মহাকাব্যের তলদেশে।
সালমান শাহর অকাল প্রয়ানের শোক সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার মতো মহাপাপ করে বসেন অনেক ভক্ত।
লিপিরানী, সেতুরানী, রুনু খাতুন, রুবিনা নার্গিস, লন্ডনী আয়শা, জেসমিন, সোনালী, বন্যা কুমারী,
জারা বেগম সহ ৫০ টির বেশী তরুন তরুনী।
অনেক জলপন্ডিত কলামিস্ট বা প্রশাসনের কর্তাবাবুরা বলেন : সালমানের মৃত্যুকে রহস্য, খুনের আলামত অস্পষ্ট – যাহা নিন্দনীয় ও দুঃখজনক। খুনকে রহস্যের ফতোয়া দিয়ে খুনিচক্রকে আড়াল করার তৈলবিহীন যন্ত্রকে ষড়যন্ত্র বলে – তা জনগন ভালো করে বুঝে।
আপনারা দেখুন বাংলা চলচ্চিত্রের কী বেহাল অবস্থা আজ। মহানায়ক শহীদ সালমান শাহর প্রয়ানের পর সিনেমা জগতে নেমে আসে ব্লু ফিল্মের কালবৈশাখী। উলঙ্গপনার রমরমা বানিজ্য, সেক্সিথিম।
হীরকযুগে সিনেমা প্রেমী পন্ডিত লোকেরা বাংলা চলচ্চিত্রকে আদর করে বলতো” বই” আর এখন বলে বেশ্যা তৈরির কারখানা।
সালমান শাহী সিমেনাগুলো পরিবারের সবাইকে নিয়ে উপভোগ করা যেতো কারণ এতে ছিলোনা নোংরামি, ছিলনা বেহাপনা, ছিলনা কোন অশীল রঞ্জন টকশো।
আর আজকাল হিজড়া নায়ক নায়িকাদের মাখামাখি, ওজু ভেঙ্গে কাপড় নষ্ট হয়তো হয় – পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেখা মানে আত্বহত্যার শামিল।
বতর্মান চলচ্চিত্রের দিকে তাকালে কী আচ্ছন্ন আচ্ছন্ন নাম নাম, হিন্দি ইংলিশের ছড়াছড়ি।
বায়ান্ন ভাষা সংগ্রাম আর একাত্তের মহান মুক্তিযুদ্ধকে অত্যন্ত সুক্ষ্মভাবে হেঁয়, কলুষিত করে বর্তমান নোরাং সিনেমা তৈরি হচ্চে। যাহা আমাদের সমাজ সভ্যাতা বিরুধী। নবাগত নায়ক নায়িকারা পশ্চিমা লীভ টুগেদার সংস্কৃতি, নগ্নতার মোড়কে বাংলা ও বাঙ্গালীর হাজার বছরের ইতিহাস চিরতরে ধ্বংশ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
এগুলো বন্ধ করার জন্য সালমান ভক্ত ও দেশবাসীকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে আহবান জানাচ্ছি।
উদারণ স্বরূপ বলা যায় চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস, সাহারা, মীন, জানবি, ববি, মাহি, আর পর্নো অভিনেত্রী পরীমণি কী ইন্ডিয়ান কুকুরছানা সানিলিওন, রুকসান, মিয়া খলিফার নব্য উত্তরসূরী নয়? পাঠক সমাজের কাছে প্রশ্ন ???
অপ্রিয় হলেও সত্য যে, ২৬ বছর পূর্বের স্ট্যালের জনক সালমান শাহর উদ্ভাবিত সালমান শাহী বেশে( *দ্যা গ্রেডার লুক ফ্যাশন অফ ফাদার* ) আমি যখন অনুষ্টানে অংশ নেই, বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করি, তখন কলিগরা আমার দিকে চোখ কপালে তোলে তাকায়, আমি কী আধুনিকতার স্টেন্ডার চেলেঞ্জের
সম্মুখীন! বাহ অথচ মহানায়ক সালমান শাহ তাঁর ভক্তদের ও প্রেমিদের এ সুস্থ সংস্কৃতি, স্ট্যালের অনন্য ধারা ২৬ বছর আগে গিফট করে গেছেন।
হায় সিনেমা জগত, হায় মনুসত্বহীন আধুনিকতা, চিত্রলোকের আড়ালে আবডালে প্রেমের বিশ্বাক্ত ছোঁবলে ভুলতে বসেছে সালমান শাহী কৃতিত্ব।
কিছু খুনিদের দিবালোকে সত্যত্বা স্বীকার, অথচ আদালত আইন অন্ধ……..মিথ্যিচার একের পর এক প্রতিবেদন সবি মনগড়া উপন্যাস। ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায় সব খল চরিত্র অবশ্যই ধ্বংশ হয়েছে।
সকাল থেকে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট থেকে টেলিমেইল আসছে বারবার – শহীদ সালমান শাহর
সাবেক স্ত্রী (আমাদের মতে খুনি সামিরা হক) সামিরা ১৪ আগস্টে ২১ ইং ৩নং বিয়ে করে ক্ষুদার্থ জরায়ুকে শান্ত করেছে, ঐ মহিলাটি এত কামুকী যে সয়ং ইন্ডিয়ান বেশ্যা সানি লিওন ও জুনিয়র লুসি হক পরিবারের কাছে লজ্জিত!! থাক থাক আমি কারো চরিত্র নিয়ে PHD. থিসিস লিখছিনা। পাঠক পাঠিকাগন আমার উপর চটবেন না। আজ ১৯ শে সেপ্টেম্বর ২০২১ সালমান শাহর ৫০ তম জন্মদিবস ছিল ।
যদি তিনি বেঁচে থাকতেন তাহলে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর ও তাঁর ৫০ তম জন্ম দিনে নানান আয়োজনে দেশবাসীকে প্রাণঢালা অভিবাদন ভালবাসা প্রকাশ করতেন।
আজ ০৬ ই সেপ্টেম্বর তাঁর ২৬ তম প্রয়ান দিবস আবার এই মাসের ১৯ শে সেপ্টেম্বর ২০২২ সালে মহানায়কের ৫১ তম জন্ম বার্ষিক এবং মহান স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধের ৫১ বছর ।।।
শোককে শক্তিতে পরিণত করে আমরা সত্য ন্যায়ের সংগ্রামে এগিয়ে যেতে হবে।
জয় হউক মানবতার,
জয় হউক সিলেটের,
বাংলাদেশ দীর্ঘজীবি হউক।
সর্বশেষ একটি কথা সালমান শাহর খুনিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনুন, কোন ছাড় নয় – বিচার হতে হবে।
*লেখক : কেন্দ্রীয় সভাপতি ( Central Mayor : স্বপ্নবাংলা পরিষদ Shopno Bangla Porishad , সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী, জ্যেষ্ঠ দায়িত্বশীল ও প্রতিষ্টাতা ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক : সালমান শাহ ঐক্যজোট,
মুখপাত্র : সালমানশাহ ফ্যান ক্লাব সমগ্র কমিটি।*
*সতর্কবাণী:: উক্ত মতামতের জন্য সম্পাদক
ও পত্রিকা কতৃপক্ষ দায়ী নহে।