ঢাকা প্রতিনিধিঃ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নয়, নয়াপল্টনেই বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে বলে জানিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাড. রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বাসায় পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। তবে ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ মূলত জনস্বার্থের সমাবেশ। এটি হারানো গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার সমাবেশ।

আজ মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর), নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যে বৃদ্ধি, পানির দাম বৃদ্ধি, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি; সব মিলিয়ে নৈরাজ্য তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। এর প্রতিবাদে গণসমাবেশ করছে বিএনপি। চলমান দুর্ভোগ সরকারের সৃষ্টি।’

তিনি বলেন, সরকারের গণবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে বিএনপি আন্দোলন করে আসছে। দেশের ১০ বিভাগের ভেতর ৮টিতে বিএনপির গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে গণসমাবেশ হবে; এরপর ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগে অনুষ্ঠিত হবে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে বর্তমান গণবিরোধী সরকার চক্রান্ত করে যাচ্ছে। যেটা তাদের চিরচেনা অভ্যাস। সেই পুরোনো গায়েবি মামলা ও নিজেরাই ষড়যন্ত্র করে ককটেল বিস্ফোরণ করে, গাড়ি ভাঙচুর করে। আবার ককটেল বিস্ফোরণও হয়নি তবুও মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে অনেক বিএনপি নেতাকর্মী নামে। যারা এলাকায় নেই তাদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। এই মিথ্যা মামলাগুলো দেওয়ার উদ্দেশ্য আগের ন্যায় জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা। এই দূরভিসন্ধিমূলক চক্রান্ত এবং এই ঘৃণ্য মাস্টার প্ল্যান।

তিনি বলেন, স্বচ্ছ নির্বাচন না করার জন্য তারা ফের পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। এগুলোকে ঢাকা দেওয়ার জন্যই বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া ও ঘরছাড়া করতেছে। কিন্তু তাদের দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসা চণ্ডনীতি যখন দেখছে তারা সফল হচ্ছে না। বিএনপির কোনো সমাবেশে জনস্রোত থামানো যাচ্ছে না। তখন তারা মিথ্যা আশ্রয় নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, গতকাল আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীমের ধানমন্ডির বাসায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করছিলেন; তখন পুলিশ অতর্কিতভাবে তার বাসায় হামলা ও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। জামালপুর জেলার মেলানদহ বিএনপির নেতা আমিরুল ইসলাম রেনু ও আব্দুল আজিজ এবং মো. নবীনসহ ৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন মিয়ার নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।

ভোলায় চরফ্যাশন উপজেলার যুবদল ও চরফ্যাশন পৌর যুবদলের শান্তিপূর্ণ মিছিলে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নৃশংস হামলায় চালিয়েছে। সেখানকার এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে এলাকা থেকে পালিয়েছে। চরফ্যাশন উপজেলা যুবদলের নবনির্বাচিত আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম প্রিন্স ও উপজেলা যুবদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন ও উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফ ফরাজীসহ শতাধিক নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় হামলা দেয়ার উদ্দেশ্যই হচ্ছে আগামী ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে যেন গণজমায়েত না হয়। কিন্তু ঢাকার সমাবেশ সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে সাফল্যমন্ডিত হবে। জনস্রোত নামবে ঢাকায়।

গণসমাবেশ নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে অনুষ্ঠিত হবে। ইনশাআল্লাহ।

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, মৎস্যজীবী দলের মো. আব্দুর রহিম, যুবদলের সাবেক নেতা এসএম জাহাঙ্গীর, স্বেচ্ছাসেবক দলের অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *