সাব্বির মির্জা স্টাফ রিপোর্টার
আব্দুল গফুর (৬০) মারা গেছেন ২১ দিন আগে। এখনও শোক কাটেনি। তার আগেই গত সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) ওই পরিবারের শখের ঘোড়াটি চুরি হয়ে যায়। পরিবারটিতে নেমে এসেছে আরেক রকম শোক। এ দিকে আব্দুল গফুরের তিন ছেলে ও এক নাতি মিলে চুরি হওয়া শখের ঘোড়াটি উদ্ধারে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা ইতোমধ্যেই ঘোড়াটির বর্ণনা দিয়ে এলাকায় দু’দিন যাবত মাংকিং করে চলেছেন। সেই সাথে আব্দুল গফুরের নাতি মহশীন আলী তাঁর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ঘোড়াটির ছবি দিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে নানার ঘোড়াটি ফেরত পেতে পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
ঘটনাটি ঘটেছে, সিরাজগঞ্জের তাড়াশের বারুহাস ইউনিয়নের বস্তুল গ্রামে। যা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। চুরি যাওয়া ঘোড়া উদ্ধারে মাইকিং এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণার খবরটি ভাইরাল হয়ে গেছে।
মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম রফিক, রতন হোসেন ও রুবেল হোসেন জানান, তাঁর বাবা মধ্যবিত্ত ঘরের কৃষক। তিনি প্রায় ৩৫ বছর যাবত ঘোড়ায় চড়ে হাট বাজার, আত্মীয় স্বজনদের বাড়িসহ নানা কাজে চলাফেলা করতেন। কিছুদিন পরপর তার ঘোড়া বিক্রি করে আরেকটি ঘোড়া কিনতেন। ঘোড়ায় চড়া ও ভালো ভালো ঘোড়া কেনা তার শখ ছিল।
সম্প্রতি আব্দুল গফুরের সাংসারিক অবস্থা শোচনীয় হলেও আবার ১ মাস পূর্বে তিনি ৫৬ হাজার টাকা দিয়ে সাদা রংয়ের একটি ঘোড়া কিনেন। যে ঘোড়াটিতে তিনি ১৫ থেকে ২০ দিন চলাফেরা করেছেন। হঠাৎ করেই গত ১ নভেম্বর আবদুল গফুর মারা যান। মারা যাওয়ার ১৭ দিন পর তাঁর শখের ঘোড়াটি বাড়ির আস্তাবল থেকে চুরি হয়ে যায়।
আর বর্তমানে শখের ঘোড়া উদ্ধারে তাঁরা আদা জল খেয়ে নেমে পড়েছেন আবদুল গফুরের ছেলে ও নাতিরা। নাতী মহশীন আলী বলেন, নানার ঘোড়াটি ফেরত পেলে কিংবা যিনি সন্ধ্যান দিবেন তাঁকে নিজ পকেট থেকে আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ময়নুল হক জানান, মৃত আব্দুল গফুরের ঘোড়ায় চড়ার শখ এলাকার সবাই জানেন। কিন্তু তিনি হঠাৎ করেই মারা যান। আর তাঁর মারা যাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই শখের ঘোড়াটি চুরি হয়ে যাওয়ায় পরিবারের লোকজন কষ্ট পাচ্ছেন। অবশ্য পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, থানায় এখনও কেউ কোন অভিযোগ করেনি।